আ.লীগ কখনই চায়নি বিরোধী দল নির্বাচনের বাইরে থাকুক: কাদের

0

লাষ্টনিউজ২৪/- আওয়ামী লীগ কখনোই চায়নি বিরোধী দল নির্বাচনের বাইরে থাকুক, দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন করত।

মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পোলিং এজেন্ট প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। নির্বাচন গণতন্ত্রের প্রাণ। সুষ্ঠু নির্বাচন গণতন্ত্রকে সুস্থ ও সুষ্ঠু রাখবে।

“অনেকেই এসেছেন কিন্তু বিএনপিসহ যারা আসেননি, তারা আসলে নির্বাচনকে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলেছেন। আমরা জানি, সেখানে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতো। তারপরও তারা নেই, কিন্তু সারা দেশে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।”

তারা নির্বাচনে না এসে নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছেন বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। বিএনপি ভেবেছিল তাদের ছাড়া সারা দেশে মানুষ থাকবে না এবং নির্বাচন উৎসবমুখর হবে না এবং ভোটার উপস্থিতি শূন্য হবে। এমন দুঃস্বপ্ন নিয়ে তারা ব্যর্থ প্রতিবাদ করেছিল। সরকার কীভাবে ব্যর্থ হবে, ভোটার কম হবে এবং নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না, সেসব নিয়ে এখন তারা নানান গল্প করছেন।

সাংসদ মন্ত্রীদের সতর্ক করে বলেন, আমাদের মতো দেশে যখন নির্বাচন হয় তখন ছোটখাটো ঘটনা ঘটে। কিছু সহিংসতাও বেড়েছে। দায়িত্বশীল নেতাদের দায়িত্বহীন কথা বলা দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। যারা সাংসদ, মন্ত্রী ছিলেন তারা আজও কটূক্তির সুরে কথা বলেন। যারা এখনও ক্ষমতা দেখায় তাদের মুখ বন্ধ করা উচিত। আমরা নির্বাচনের উদ্দেশ্য ব্যাহত হতে দিতে পারি না। পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। যারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। এখানে কোন গোলমাল হবে না।

“প্রতিদিন পত্রিকা খুললে দেখি গুন্ডামি। কারো দাদার সম্পত্তি নাকি সংসদীয় এলাকা? এলাকার মানুষ, জনগণকে ভোট দিতে হবে, ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে সে পরিবেশ তৈরি করতে হবে। যারা এ ব্যাপারে বাধা দিতে হবে।কিছু লোকের কথা শুনলে অবাক লাগে।এরা কিসের প্রতিনিধি?যারা আজেবাজে কথা বলে তাদের থেকে সাবধান।আওয়ামী লীগের কেউ ভোটের পরিবেশ নষ্ট করবে না।নির্বাচন কমিশন যদি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। যারা অপচয় করে, আমরা অসংরক্ষিত সমর্থন দেব। আমি এখানে আপস করব না।’

কাদের বলেন, আমরা এই নির্বাচন খুব ভালোভাবে করতে চাই। নির্বাচন নিয়ে বদনাম করতে চাই না। শেখ হাসিনা সত্যিকার অর্থে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন চান। তার ইচ্ছা পূরণ করা উচিত। এ ব্যাপারে পোলিং এজেন্টদের পরিশ্রমী হতে হবে।

“আমরা খুব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। পুরো বিশ্ব সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আমরা বৈশ্বিক সংকটের প্রভাব থেকে বিচ্ছিন্ন নই। আন্তর্জাতিক রাজনীতির সাথে একটি অবিচ্ছেদ্য বন্ধন রয়েছে।’

ইউক্রেন, সুদান ও মধ্যপ্রাচ্যের সংকট তুলে ধরে কাদের বলেন, এমন পরিস্থিতিতে আমরাও সংকটে আছি। বড় বড় দেশগুলো দোষারোপ করলেও দায় আমাদের ওপর বর্তায়, আমাদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশে গরিবরা কষ্ট পাচ্ছে, প্রান্তিক মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজারেও সৃষ্টি হয়েছে দুঃখ-কষ্টের পরিবেশ। ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আমরা দায় এড়াতে পারি না। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়ে গেছে, ডলার সংকট, মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি, পরিবহনে অস্বাভাবিক খরচ বেড়েছে।

সংকটের মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, কেউ কেউ বলতে পারেন এই সংকটের পর নির্বাচন করতে হবে। অবশ্যই না, কারণ আমাদের একটা সংবিধান আছে, সাংবিধানিক নিয়ম আছে। নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান রক্ষা করতে হবে। নির্বাচন করা ছাড়া উপায় নেই। প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নির্বাচন করতে হবে।’

বিএনপির নির্বাচন বয়কট আন্দোলনের কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, মিছিল-বিক্ষোভ নয়, সন্ত্রাস ও সহিংসতার মাধ্যমে তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়। এই সন্ত্রাস-সহিংসতা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। কাদের সহিংসতার ক্ষতি চিত্রিত করেছেন।

বিশ্বের অনেক দেশে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে কাদের বলেন, নির্বাচন বানচালের জন্য সহিংসতার প্রস্তুতি একটি বিরল ঘটনা। এটা বাংলাদেশে হচ্ছে। নেতা নেই, রিমোট কন্ট্রোলে নেতৃত্ব।

তারেক রহমানের সমালোচনা করে কাদের বলেন, তিনি এখন রাজনীতি করছেন না, রাজনীতিকে ধ্বংস করছেন। দেশের গণতন্ত্র ধ্বংসের ষড়যন্ত্র। তার পিতা জিয়াউর রহমান এদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য আওয়ামী লীগের সংগ্রামের কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে হরতাল করেছিলাম কিন্তু বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থাকে ধ্বংস, বিকৃত ও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তাই আমরা তা চাই না। আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করিনি। বিচার বিভাগ করেছে।সুতরাং এই ব্যবস্থা মৃত, এটাকে পুনরুজ্জীবিত করার দরকার নেই।

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.