নির্বাচনের দিন বিএনপি-জামায়াত সহিংসতার ষড়যন্ত্র করছে: কাদের

0

ষ্টাফ রিপোর্টার/- বিএনপি-জামায়াত নির্বাচনের দিন সারাদেশে সন্ত্রাস ও সহিংসতা করতে পারে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘তারা এখনো ভয়ানক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।’

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আছে, তারা এখনো ভয়ানক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। নির্বাচনের দিন সারা দেশে সন্ত্রাস ও সহিংসতা সৃষ্টি করতে পারে। নির্বাচনকে ঘিরে বিএনপি-জামায়াত নানা গুজব ছড়াচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন ভুয়া ভিডিও। তাই আমরা সতর্ক আছি এবং সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

দলীয় নেতা-কর্মীদের ভোটে সহযোগিতা করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ফলাফল ঘোষণার পর কোনো অশুভ শক্তি যাতে হামলা, সংঘর্ষ ও সহিংসতা করতে না পারে সেজন্য সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে।

“ভোটারদের অনুরোধ করা হবে যে তারা নিজেরা এবং তাদের পরিবারের সাথে ভোরবেলা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটের অধিকার প্রয়োগ করুন এবং অন্যদের ভোট দিতে উত্সাহিত করুন।”

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবারো দেশবাসীর সেবা ও কল্যাণে নিয়োজিত হওয়ার সুযোগ পেতে নৌকা ব্র্যান্ডের ভোট চেয়ে বলেন, আসুন আমরা নৌকা ব্র্যান্ডকে ভোট দিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশগ্রহণ করি এবং দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করি। এবং সার্বভৌমত্ব।’

বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের উপস্থিতি উৎসাহব্যঞ্জক উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা নিজ চোখে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন। আমরা আশা করি, তারা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচনের সঠিক চিত্র বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরবেন।

নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াতের অপরাজনীতির কথা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি-জামায়াত ও তাদের সহযোগীরা ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত ২৩ দিনের অবরোধ ও ৬ দিনের হরতাল কর্মসূচি দিয়ে সারাদেশে সহিংসতা ও নাশকতা চালিয়েছে। . তাদের হামলা-সহিংসতায় একজন শ্রমিক লীগ নেতা ও দুই বাস হেলপার নিহত এবং ট্রেনে নাশকতায় ৬ জন নিহত হন। এ সময় বাসের ২০ জন চালক ও হেলপার, পুলিশ বাহিনীর ১৪৪ সদস্য, আনসার বাহিনীর ২৫ সদস্য, ফায়ার সার্ভিসের ৩ সদস্য, ১০২ জন সাধারণ মানুষ এবং অর্ধশতাধিক সাংবাদিক দগ্ধ ও আহত হন। দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ৬৫৫টি গাড়ি ও ১০টি অ্যাম্বুলেন্সে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করা হয়। ১২টি ট্রেনে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের ৬টি দলীয় কার্যালয় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। খুলনায় আদালত কক্ষে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০১৩-১৪ সালে বিএনপি-জামায়াতের পেট্রোল বোমা হামলায় নারী ও শিশুসহ ৩০৪ জন নিরীহ মানুষ প্রাণ হারায়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ২৬ জনকে হত্যা করেছে বিএনপি-জামায়াত। ৫৮২টি স্কুলে আগুন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে অবরোধে ৫ শতাধিক নিরীহ মানুষ নিহত হয়। তারা 3,500 মানুষকে পুড়িয়ে দেয় এবং প্রায় 4,000 গাড়িতে আগুন দেয়।

২৮ অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত বিএনপি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল করার লক্ষ্যে লাগাতার রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এর অর্থ জনগণকে ভোট দেওয়া থেকে বিরত রাখা, নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করা। বিশ্বের কোনো দেশে নির্বাচন বিঘ্নিত করার মতো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচির নজির আছে কি?

‘আমাদের বিদেশি বন্ধুরা বাংলাদেশে পশ্চিমা মানের গণতন্ত্র দেখতে চায়। কোন রাজনৈতিক দল কি সেসব দেশে ধর্মঘট করে? তারপর যারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে চায় তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা উচিত।’

বিএনপি-জামায়াতের নাশকতার জবাব ব্যালটের মাধ্যমে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা ব্যালটের মাধ্যমে ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে, সহিংসতাকারীদের বিরুদ্ধে রায় দেবেন। যারা মা-শিশুকে ট্রেনে পুড়িয়েছে, পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা করেছে, বাস কন্ডাক্টর এবং সেই খুনিদের ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দেবে। আপনার বিচারে সমস্ত অশুভ শক্তি আবার পরাজিত হবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণের প্রতিটি ভোট স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়কে বাস্তবে রূপ দেবে। আমাদের জনসংখ্যার একটি বড় অংশ তরুণ। এই তরুণ সমাজই হবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার মূল কারিগর। তারুণ্যের শক্তিই বাংলাদেশের অগ্রগতি। প্রতিটি নতুন যুব ভোটারের সক্রিয় সমর্থন আগামী ৫ বছরে ১ কোটি চাকরি নিশ্চিত করবে।

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আওয়ামী লীগের সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, অর্থ সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কবি কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.