ষ্টাফ রিপোর্টার/- ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো: আতিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নগরীর একটি ভবনে বসবাস করেও কেউ কাউকে সেভাবে চেনে না। তাদের মধ্যে যোগাযোগ নেই। তাই সবাইকে জানার জন্য এবং সম্পর্ক মজবুত করতে এই পাড়া মহোৎসবের আয়োজন। পাড়া-মহল্লার উৎসবের মাধ্যমে সামাজিক বন্ধন মজবুত হবে।
শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি, ২০২৪) সকালে রাজধানীর বারিধারা কূটনৈতিক জোনের ৩ নম্বর রোডে পাড়া উৎসবের উদ্বোধনকালে ডিএনসিসি মেয়র এসব কথা বলেন।
এ সময় ডিএনসিসি মেয়র বলেন, বর্তমানে আমরা সবাই মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট নিয়ে ব্যস্ত। আমাদের সমাজে সবার সাথে সম্পৃক্ততা খুবই প্রয়োজন। পাশের লোকজনকে আমরা চিনি না। প্রতিবেশীর বাড়িতে কোনো সমস্যা আছে কি না আমরা জানি না। ছোটবেলায় আমরা পাড়ায় উৎসব করতাম। সব প্রতিবেশীর সাথে খুব ভালো সম্পর্ক ছিল। আমি আমার বড়দের সম্মান করতাম, তাদের দেখলে সালাম দিতাম। ঢাকায় এ ধরনের চিত্র দেখা যায় না। তাই সামাজিক বন্ধন তৈরির জন্য এই পাড়া মহোৎসব আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছি।
মেয়র আরও বলেন, গ্রামের ঐতিহ্যের পরিচয় দিতে, সামাজিক সম্পর্ক জোরদার করতে আমরা এর আগে উত্তরা ও গুলশানে পাড়া উৎসবের আয়োজন করেছি। আজ বারিধারায় চলছে পাড়া উৎসব। পাড়া মহোৎসবের মাধ্যমে বলতে চাই আমরা জনগণের পাশে আছি। সুখের সময়ে প্রতিবেশীদের পাশে না দাঁড়ালেও আমরা অন্তত বিপদের সময় তাদের পাশে দাঁড়াব। আমরা এই উৎসব থেকে অঙ্গীকার নিতে চাই যে কেউ রাস্তায় ময়লা ফেলবে না। আমরা সবাই মিলে একটি সুন্দর শহর গড়ে তুলব।
বারিধারা সোসাইটির বাসিন্দাদের উদ্দেশে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, বারিধারা লেকের পানি দূষিত হয়ে পড়েছে। আমরা সেখানে মাছ চাষ করতে পারি না। মশা চাষ হচ্ছে। বেশিরভাগ বাড়িই সিটি করপোরেশনের সারফেস ড্রেনের সঙ্গে যুক্ত। অভিযান চালিয়ে কলাগাছ ঢুকিয়ে অবৈধ সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছি। দয়া করে আমাদের সারফেস ড্রেনের সাথে পয়ঃনিষ্কাশন সংযোগ করবেন না। বৃষ্টির পানি এবং রান্নাঘরের পানি নিষ্কাশনের জন্য সারফেস ড্রেন তৈরি করা হয়।
পাড়া মহোৎসবের উদ্বোধন শেষে ডিএনসিসির মেয়র মো. বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারা কুক, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা, ফিলিপাইনের রাষ্ট্রদূত লিও টিটো এল আসান জুনিয়র, ব্রুনাই দারুসসালামের রাষ্ট্রদূত হাজি হারিস বিন ওসমান এবং অন্যান্য স্থানীয় বাসিন্দা এবং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে ঢাক ঢোল বাজাচ্ছেন আতিকুল ইসলাম। উৎসব উদযাপন করতে আসা পরিবারের সদস্যরা। ভাগ করা
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে এই পাড়া মহোৎসবে ছিল দেশি পিঠা, বায়োস্কোপ, পুতুল নাচ, ম্যাজিক শো, স্বাস্থ্যসেবা স্টল, পাটজাত পণ্য। এছাড়া ছিল উইশ বোর্ড, শিশুদের পেইন্টিং ক্যানভাস, পেইন্ট ব্রাশ, ক্যারাম বোর্ড, টেবিল টেনিস দাবাসহ বিভিন্ন ধরনের খেলা। স্ট্রিট ফুড, ট্যালেন্ট শো, স্ট্যান্ড আপ কমেডি, রাস্তার নাটক, খেলাধুলা, ঐতিহ্যবাহী ও আধুনিক মার্শাল আর্টেরও আয়োজন করা হয়। সবার জন্য উন্মুক্ত, এই আশেপাশের উৎসব চলে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত।
‘হিরোস ফর অল’-এর প্রতিষ্ঠাতা রেহনুমা করিমের পরিচালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা, ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ ক্যাথরিন কুক, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। ফিলিপাইনের লিও টিটো এল আসান জুনিয়র, ব্রুনাই দারুসসালাম হাজির রাষ্ট্রদূত। হারিস বিন ওথমান, জাপান দূতাবাসের মন্ত্রী মাচিদা তাতসুয়া, লিবিয়ান দূতাবাসের মন্ত্রী প্লেনিপোটেনশিয়ারি আবদালফাত্তাহ খিত্রেশ, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকা স্কুলের প্রধান জন স্মিথিস, 18 নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ জাকির হোসেন, সংরক্ষিত ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর হাসিনা বারি চৌধুরী, ফেরোজ সোসাইটির সভাপতি মো. হাসানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।