পাছে আমরা ভুলে যাই: রফিক বিস্মৃতিতে চলে যায়

0

ষ্টাফ রিপোর্টার – ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদ দুর্ভাগ্যবশত নতুন প্রজন্মের মধ্যে বিস্মৃতির অতলে পতিত হয়েছেন। ভাষা আন্দোলন, শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস সম্পর্কে তার নিজ গ্রামের শিশু-শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে জানে না, ভাষা শহীদ রফিকের বীরত্বপূর্ণ অবদানের কথাই বলা যায় না।

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলার স্বীকৃতি ও অধিকারের দাবিতে রফিকসহ অগণিত পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। হুমকি এবং রক্তপাতের সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও, তারা 144 ধারা লঙ্ঘন করে মিছিল করেছিল। দুঃখজনকভাবে, শান্তিপূর্ণ মিছিলটি ঢাকা মেডিকেল কলেজে পৌঁছলে পুলিশ গুলি চালায় এবং রফিকসহ আরও অনেকে রাজপথে শহীদ হন।

মানিকগঞ্জের পার্লি গ্রামে জন্মগ্রহণকারী রফিকের সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের কারণে তার সম্মানে তার গ্রামের নামকরণ করা হয় ‘রফিকনগর’। যাইহোক, নতুন প্রজন্ম তার বীরত্বপূর্ণ কাজগুলি সম্পর্কে অবগত না থাকায় তার উত্তরাধিকার ম্লান হয়ে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।

শহীদ রফিক স্মৃতি জাদুঘর এবং লাইব্রেরির মতো উদ্যোগ নিয়ে রফিকের পরিবার তার স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে। তবে যাদুঘর ও গ্রন্থাগারে দর্শনার্থী ও পাঠকের অভাব হতাশাজনক, ভাষা আন্দোলন ও শহীদদের ওপর অপ্রতুল বই।

রফিকের মতো বীরের আত্মত্যাগ সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে শিক্ষিত করা অপরিহার্য। লাইব্রেরীকে আরও প্রাসঙ্গিক বই দিয়ে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করা উচিত এবং আরও দর্শনার্থী ও পাঠকদের আকৃষ্ট করার জন্য এর সুবিধাগুলি আধুনিকীকরণ করা উচিত।

উপরন্তু, যাদুঘরের বাইরের ম্যুরালে রফিকের চেহারা নির্ভুলভাবে চিত্রিত হয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। জেলা পরিষদ এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে রফিকের উত্তরাধিকার সংরক্ষণ ও সম্মানের জন্য তার নামে একটি অডিটোরিয়াম স্থাপনসহ বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে কাজ করতে হবে।

রফিক ও অন্যান্য ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করার সাথে সাথে আমাদের মাতৃভাষা রক্ষায় তাদের অমূল্য অবদানের কথা যেন আমরা ভুলে না যাই। তাদের সাহসিকতা এবং নিঃস্বার্থতা বর্তমান প্রজন্মকে ভাষা, সংস্কৃতি এবং পরিচয়ের গুরুত্বের অনুস্মারক হিসাবে পরিবেশন করা উচিত। রফিক হয়তো বিস্মৃতিতে চলে গেছেন, কিন্তু তার চেতনা ও উত্তরাধিকার চিরকালের ইতিহাসে খোদিত হয়ে থাকবে।

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.