আন্তর্জাতিক ডেস্ক/- কানাডা স্বপ্নের দেশ। অনেক মানুষ তাদের স্বপ্নকে সত্যি করতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কানাডায় পাড়ি জমায়। কিন্তু এখন ঘটছে উল্টোটা। অনেকেই এখন কানাডা ছেড়ে অন্য দেশে যাচ্ছেন।
৯ ডিসেম্বর রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের প্রথম ৬ মাসে ৪২ হাজার মানুষ কানাডা ত্যাগ করেছেন। ২০২২ সালে ৯৩ হাজার ৮১৮ জন কানাডা ছেড়েছেন। আগের বছর ৮৫,৯২৭ জন দেশ ছেড়েছেন বলে সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী।
2019 সালে কানাডা ছেড়ে অভিবাসীদের সংখ্যা দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করে এমন একটি সংস্থা দ্য ইনস্টিটিউট ফর কানাডিয়ান সিটিজেনশিপ (আইসিসি) সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, 2019 সালে গত দুই দশকে সবচেয়ে বেশি মানুষ কানাডা ছেড়েছে। কোভিড মহামারীর কারণে কানাডা ছেড়ে যাওয়ার সংখ্যা কিছুটা কমেছে, কিন্তু সংখ্যাটি এখন আবার বাড়তে শুরু করেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে যে এই বছরের প্রথম ছয় মাসে 263,000 মানুষ অন্যান্য দেশ থেকে কানাডায় প্রবেশ করেছে। দেশ ছাড়ার সংখ্যা সেই তুলনায় অনেক কম হলেও এই প্রবণতা কিছু পর্যবেক্ষককে চিন্তিত করেছে।
যে কারণে অনেক অভিবাসী কানাডা ছেড়ে চলে যাচ্ছে
রয়টার্সের মতে, কানাডা ইমিগ্রেশনের উপর নির্মিত। কিন্তু সেখানে মানুষ দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। গত 8 বছরে, 2.5 মিলিয়ন মানুষ কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি পেয়েছে। জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয়ের কারণে কানাডা ছেড়েছেন। 25 বছর বয়সী কারা, যিনি 2022 সালে হংকং থেকে শরণার্থী হিসাবে কানাডায় প্রবেশ করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন যে তিনি কখনই ভাবেননি যে পশ্চিমা দেশগুলিতে আপনি কেবল একটি রুম ভাড়া নিতে সক্ষম হবেন।
কারা বলল, সে বেসমেন্টে একটা রুম ভাড়া করে। এজন্য তাকে দিতে হবে ৬৫০ কানাডিয়ান ডলার (বাংলাদেশি প্রায় ৫৩ হাজার টাকা)। ফলে তার মাসিক আয়ের ৩০ শতাংশ চলে যায় বাড়ি ভাড়ায়। বাকি খরচ মিটিয়ে মাস শেষে তার আর কিছুই থাকে না। কিন্তু হংকংয়ে থাকাকালীন তিনি যে অর্থ উপার্জন করতেন তার এক-তৃতীয়াংশ সঞ্চয় করা যেত।
উল্লেখ্য, ট্রুডো সরকার গত মাসে একটি নতুন নীতি চালু করেছে। এর অধীনে, 2025 সাল থেকে সর্বাধিক 500,000 মানুষ কানাডায় নতুন বসতি স্থাপন করতে সক্ষম হবে। এই নীতির উদ্দেশ্য হল আবাসন খাতের উপর চাপ কমানো। তবে অনেকেই মনে করেন এই পদক্ষেপ যথেষ্ট নয় এবং এটি অনেক দেরিতে নেওয়া হয়েছে।
- Advertisement -