ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

0

লাষ্টনিউজ২৪/-  আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পরিকল্পনা সাজিয়ে আওয়ামী লীগ ঘোষিত নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে জনগণের কাছে যাওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। .

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) ছয় জেলার নির্বাচনী জনসভায় কার্যত যুক্ত করা ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান।

রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন থেকে শেরপুর, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, চাঁদপুর, নরসিংদী, বান্দরবান জেলার নির্বাচনী জনসভায় কার্যত অংশ নেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগই পারে দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে। গতকাল (বুধবার) আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছি। ইশতেহার পড়ুন। ইশতেহার নিয়ে জনগণের কাছে যান এবং নৌকায় ভোট চান।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ১৫ বছরে দেশে যে উন্নয়ন করেছি তা অব্যাহত রাখতে হবে এবং ক্ষমতায় আসলে আওয়ামী লীগই সেই অগ্রগতি ধরে রাখতে পারবে। তাই নৌকার ব্র্যান্ডকে ভোট দিতে মানুষের দ্বারে দ্বারে যাবেন। আপনারা ভোট চান। জনগণ যেন আমাদের ভোট দিয়ে সেবা করার সুযোগ দেয়। আরেকটি কথা- যেহেতু নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে, তাই নির্বাচনের পরিবেশ যাতে সুন্দর, উৎসবমুখর ও প্রতিযোগিতামূলক হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

বিএনপির বিষয়ে তিনি বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল, আরেকটি দল (জামায়াত) যুদ্ধাপরাধীদের দল। তাদের ছাড়া নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে না বলে আমরা বিশ্বাস করি না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনসমাগম হলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে। এখানে ভোটারদের অংশগ্রহণে নির্বাচন হবে অংশগ্রহণমূলক। আমরা এটাই চাই। সন্ত্রাসীরা নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। মানুষ খুন, দুর্নীতি করা ছাড়া তাদের থেকে দেশের কোনো কল্যাণ হবে না। তারা মানুষকে কিছুই দিতে পারে না।

তিনি বলেন, সেজন্য নির্বাচনের পথ খুলে দিয়েছি। হ্যাঁ, নৌকা মার্কা দিয়েছি, পাশাপাশি অন্য যারা দাঁড়াতে চান, তারাও দাঁড়াবেন। এখানে একটি অনুরোধ, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখুন। তিনি তার ভোট চান। জনগণ যাকে খুশি ভোট দেবে। এটা আমাদের স্লোগান। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে চাই তাকে দেব’ এই স্লোগান দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি। এই স্লোগান নিয়েই আমরা যুদ্ধ করেছি। সে কথা মাথায় রেখে তিনি সবার ভোট চাইবেন। জনগণ যাকে ভোট দেবে তাকেই গ্রহণ করবে। সেভাবেই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রার্থীর যেমন ভোট চাওয়ার অধিকার রয়েছে, তেমনি জনগণেরও ভোট দেওয়ার অধিকার রয়েছে। এখানে কাউকে জোর করার চেষ্টা করবেন না। কোনো দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করবেন না।

তিনি বলেন, এখন ডিজিটাল যুগ। সবার কাছে মোবাইল ফোন ও সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। তাই যে আওয়াজ করুক, ছবি উঠবে। আর নিজেদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে কেউ রেহাই পাবে না। এটা মাথায় রাখা উচিত। জনগণ ভোট দেবে। তাদের ভোটের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আসতে দিতে হবে এবং নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সবাইকে ব্যবস্থা নিতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আওয়ামী লীগ আবারও জনগণের সেবা করার সুযোগ পাবে ইনশাআল্লাহ। এটাই জনগণের কাছে আমাদের দাবি। এটাই আমাদের চাওয়া। ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা গড়ে তুলব একটি স্মার্ট বাংলাদেশ, জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত ও সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ, ইনশাআল্লাহ।’

আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে আওয়ামী লীগ জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়ন অগ্রগতি হয়েছে। সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছে।

শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে ক্ষমতার পরিবর্তন হয়। এদেশের ইতিহাস বলে আওয়ামী লীগের হাতে এদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়, অন্য কোনো দলের হাতে নয়। আওয়ামী লীগ ২০০৮ সালে ইশতেহার বাস্তবায়ন করেছে। শিক্ষার হার বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা দিন পরিবর্তনের সনদ ঘোষণা করেছি। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকার কাজ করেছে। আজ বাংলাদেশের উন্নয়নের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। এটি 2021 সালে একটি উন্নয়নশীল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এটিকে ধরে রাখতে হবে এবং উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে এগিয়ে নিতে হবে। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, দূরদর্শী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে পরিকল্পিতভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। প্রতিটি মানুষ যেন উন্নত জীবন পায় এটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি।

আওয়ামী লীগ সভাপতি আগামী ২০ ডিসেম্বর সিলেটে হযরত শাহজালাল (রহ.) ও শাহ পরান (র.) মাজার জিয়ারত করে আনুষ্ঠানিকভাবে দলের নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। আগামীকাল তিনি বরিশালে যাবেন। আজ বিকেল ৩টায় জেলা শহরে নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দেবেন তিনি।

এরপর ৩০ ডিসেম্বর গোপালগঞ্জ সফর করবেন এবং গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া) আসনের জনসভায় ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা। একই দিন মাদারীপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। তেজগাঁও দলীয় কার্যালয়ে এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী শেরপুরে উপস্থিত ছিলেন।

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.