LastNews24
Online News Paper In Bangladesh

৩৬ মণ ওজনের ‘স্বপ্নরাজ’, দাম ২০ লাখ!

0

পাবনা প্রতিনিধি বিশাল দেহের অধিকারী সাদা-কালো ফিজিয়ান জাতের ষাঁড় গরুটি হাঁটে হেলেদুলে। তবে বেশ শান্তশিষ্ট। কাউকে আক্রমণ করার প্রবণতা নেই। তিনবেলা ১৭ থেকে ১৮ কেজি স্বাভাবিক সুষম খাবারের পাশাপাশি নাশতা হিসেবে আপেল, কলা, আঙুরসহ নানা ফলমূল তার খুব পছন্দ।

নাম তার ‘স্বপ্নরাজ’। আর তাকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছেন খামারি মোজাম্মেল হক বাবু।পাবনার চাটমোহর উপজেলার হাণ্ডিয়াল ইউনিয়নের বাঘইল মধ্যপাড়া গ্রামের মৃত শহীদ আলী ফকিরের ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য মোজাম্মেল হক বাবুর খামারে রয়েছে এই ষাঁড় গরুটি। আদর করে নাম রেখেছেন ‘স্বপ্নরাজ’। চার বছর ধরে লালন-পালন করছেন তিনি। খামারি বাবুর দাবি, ছয় দাঁতওয়ালা গরুটির ওজন হবে আনুমানিক ৩৬ মণ। বিক্রির জন্য তিনি দাম হাঁকছেন ২০ লাখ টাকা। গরুটি দেখতে বাড়িতে ভিড় করছেন অনেকেই।আলাপকালে কৃষক বাবু বলেন, পৈতৃক সূত্রে তারা গরুর খামারি। ছোটবেলা থেকেই গরু লালন-পালন করেন। চার বছর আগে তার নিজের খামারে গাভি থেকে একটি বাছুর হয়। সেটিকে তিনি খুব যত্ন করে লালন-পালন করতে থাকেন। তার সঙ্গে স্ত্রী আঞ্জুয়ারা খাতুনও বেশ পরিশ্রম করেন। বড় হতে থাকে ষাঁড়টি। সেই সঙ্গে বড় হতে থাকে কৃষক দম্পতির স্বপ্ন। সেই জন্য আদর করে তারা গরুটির নাম রাখেন ‘স্বপ্নরাজ’।

বাবু জানান, চার বছরে স্বপ্নরাজ এখন বিশাল দেহের অধিকারী হয়েছে। ফিতা দিয়ে গরুর দৈর্ঘ্য-ব্যাসার্ধ মেপে ধারণা, স্বপ্নরাজের ওজন অন্তত ৩৬ মণ হবে। এবারের কোরবানি ঈদে বিক্রির জন্য দাম হাঁকছেন ২০ লাখ টাকা। কোনো হাটে নিয়ে নয়, বাড়ি থেকেই বিক্রির আশা করছেন তিনি। গত বছর কোরবানির আগে স্বপ্নরাজের ওজন ছিল ২২-২৩ মণ। তখন দাম উঠেছিল ছয় লাখ টাকা। কিন্তু ওই দামে বিক্রি করেননি তিনি। তবে, এবার স্বপ্নরাজকে বিক্রির মাধ্যমে নিজের স্বপ্ন পূরণ করতে চান।মোজাম্মেল হক বাবু বলেন, স্বপ্নরাজকে লালন-পালন-মোটাতাজা করতে তিনি কোনো ওষুধ বা ইনজেকশন ব্যবহার করেননি, তিন বেলা সুষম খাবার দিয়েছেন। প্রতিদিন ১৭-১৮ কেজি খাবার খায় স্বপ্নরাজ। খাবারের তালিকায় রয়েছে ভুট্টা, ছোলা, যব, খেসারি ডাল, ডাবলি, ধইঞ্চা, মসুর ডাল। এগুলো ভাঙিয়ে গুঁড়া করে নেওয়া হয়। তার সঙ্গে গমের ছাল, তিলের খৈল, ধানের গুঁড়া মিশিয়ে নিয়ে জাল দিয়ে ফুটিয়ে তিন বেলা খাওয়ানো হয়। তবে এসব খাবারের পাশাপাশি তিন বেলা নাশতা হিসেবে কলা, আপেল, আঙুরসহ নানা রকম ফলমূল খুব পছন্দ স্বপ্নরাজের।

মোজাম্মেল হক বাবুর স্ত্রী আঞ্জুয়ারা খাতুন বলেন, চার বছর ধরে স্বপ্নরাজকে নিজের সন্তানের মতো লালন-পালন করেছি। মানুষ সন্তানকে যেমন আগলে রাখে, আমিও  তেমনভাবে আগলে রেখেছি। নিজের হাতে খাইয়েছি, যত্ন করেছি। এখন বিক্রি করে দিতে হবে শুনে সন্তান হারানোর মতো কষ্ট পাচ্ছি।এদিকে, এত বড় ষাঁড় গরু দেখতে খামারি মোজাম্মেল হক বাবুর বাড়িতে ভিড় করছেন অনেকেই। গরু দেখতে আসা মনিরুল ইসলাম ও শামীম হোসেন বলেন, এখানে বিশাল গরু আছে শুনে দেখতে আসছি। এত বড় গরু এর আগে দেখিনি। দেখলাম বেশ বড়। ওজন শুনলাম ৩৬ মণ। আশা করি খামারি গরুটি বিক্রি করে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবেন।চাটমোহর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, বড় গরুর চাহিদা আর আগের মতো নেই। আমরা কৃষককে এত বড় করতে উৎসাহিত করি না।  মোজাম্মেল হক বাবুর ষাঁড় গরুর বিষয়টি জানি। আশা করি, তিনি বিক্রি করে লাভের মুখ দেখবেন। কোরবানি সামনে রেখে আমরা খামারিদের সব সময় পরামর্শ দিয়ে পাশে থাকি। অনলাইনে গরু বিক্রির ব্যবস্থা রয়েছে। সেখানে উপজেলার খামারিদের গরুর ছবি ও তথ্য আপলোড করা হচ্ছে।

About Author

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More