কক্সবাজার প্রতিনিধি ॥ সেন্টমার্টিন দ্বীপে পর্যটক সীমিত না করার দাবী জানিয়েছেন সী-ক্রুজ অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কোয়াব) নেতৃবৃন্দ। বুধবার বিকেলে সৈকতপাড়ের একটি রেস্টেুরেন্টের সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করে এই দাবী জানানো হয়। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে চলাচলকারী জাহাজ মালিকদের সংগঠন স্কোয়াব সভাপতি তোফায়েল আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে যদি পর্যটক সীমিত করা হয়, তাহলে কক্সবাজারে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে তৈরি হোটেল মোটেল ও ব্যবসা এবং পর্যটন খাতে লক্ষ কোটি টাকার ধস নামবে।
জাহাজ ব্যবসায়ীরা বলেন, সেন্টমার্টিনে অন্তত ৩হাজার করে হলেও পর্যটক যেতে বাধা না থাকলে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের মূল্যায়ন বাড়বে বহুগুণে। পাঁচ শতাধিক হোটেল মোটেল, শুটকি, লবণ, চিংড়িসহ নানা ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি পাবে। ৬/৭ লাখ বেকার মানুষের নতুন কর্মসংস্থান হবে। এসব ব্যবসা বাণিজ্যের অন্যতম প্রাণশক্তি হচ্ছে একমাত্র সেন্টমার্টিন। কারণ সেন্টমার্টিন দ্বীপকে ঘিরেই অধিকাংশ পর্যটকের আগমন ঘটে থাকে কক্সবাজারে। কিন্তু সেন্টমার্টিনে যদি পর্যটক সীমিত করা হয়, তাহলে কক্সবাজারে হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে তৈরি হোটেল মোটেল এবং পর্যটন খাতে লক্ষ কোটি টাকার বিনিয়োগে ধ্বংস হয়ে পড়তে পারে।
জাহাজ মালিক নেতৃবৃন্দ বলেন, এক যুগের বেশি সময় ধরে পর্যটন শিল্প উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বিশেষ করে বাংলাদেশের অফুরান সম্ভাবনার প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের সুরক্ষায় পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাসহ জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব থেকে দ্বীপকে রক্ষার জন্য নানা কর্মসূচি পালন করে চলেছি। ২ বছর আগে করোনা মহামারীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে জাহাজে পর্যটক ওঠানামা এবং পারাপার করা হয়েছে। সেন্টমার্টিনে স্বাস্থ্যবিধি কার্যকর থাকায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি এবং কারও করোনা শনাক্তও হয়নি। সেন্টমার্টিনকে করোনামুক্ত রাখতে জাহাজ মালিক-কর্তৃপক্ষের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
ঠিক এই মুহূর্তে জাহাজ চলাচল সীমিত করার পরিকল্পনা করছে বিআইডব্লিউটিএ। মাত্র দুইটি জাহাজ চললে কয়েক হাজার পর্যটক বঞ্চিত হবে। যার প্রভাব পড়বে পুরো পর্যটন শিল্পে। ক্ষতিগ্রস্ত হবে কক্সবাজারের হোটেল মোটেল ব্যবসা। জাহাজ চলাচল বন্ধ হলেও বিকল্প পথে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঠের নৌকায় চড়ে সেন্টমার্টিন যাবে পর্যটকরা। সুতরাং যে উদ্দেশ্যে জাহাজ চলাচল সীমিত করা হচ্ছে- তার কোন সুফল আসবে না। বরং ঝুঁকি বাড়বে পর্যটন খাতে। এ ক্ষেত্রে আমাদের সুপারিশ হচ্চে-, বর্তমান চলাচলরত ১০টি জাহাজে করে সর্বোচ্চ ৩০০০ পর্যটক যাতায়াত করার সিদ্ধান্ত নেয়া যেতে পারে। দ্বীপে আবাসিক হোটেলগুলোতে কক্ষ আছে ১৪০০টি। প্রতি কক্ষে একজন করে দৈনিক ১৪০০ পর্যটক সেন্টমার্টিনে রাত্রি যাপন করুক। বাকি ১৬০০ পর্যটক গন্তব্যে ফিরে এসে কক্সবাজার শহরে রাতযাপন করতে পারে। বিগত ১০ বছর ধরে এই প্রক্রিয়ায় পর্যটক যাতায়াত করে আসছে দেশের প্রবাল দ্বীপ খ্যাত সেন্টমার্টিনে। সরকারি নির্দেশনা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভবিষ্যতেও এই ধারা অব্যাহত রাখতে চান সী-ক্রুজ অপারেটর ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (স্কোয়াব) নেতৃবৃন্দ।