ময়মনসিংহ প্রতিনিধি পুরো মাথায় ব্যান্ডেজ। প্রতিবেশীদের আঘাতে আরশাদুলের মাথায় লেগেছিল ৪৪টা সেলাই। নিরাপত্তার কারণে ব্যান্ডেজের ওপর লেখা ছিল ‘মাথায় হাড় নাই, চাপ দিবেন না’। আরশাদুলের চিকিৎসা চলছিল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।তবে তার মাথার মগজের কিছু অংশ রাখা ছিল সাভারের আশুলিয়ায় অবস্থিত ইনস্টিটিউট অব টিস্যু ব্যাংকিং অ্যান্ড বায়োম্যাটেরিয়াল রিসার্চ সেন্টারে। আরশাদুল একটু সুস্থ হলে তার মগজ প্রতিস্থাপন করা হবে বলে পরিবারকে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। সেই অপেক্ষায়ও ছিল পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু সব আশা শেষ করে দিয়ে মারা গেছেন আরশাদুল। শনিবার রাতে ঢাকা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। আরশাদুলের মা রুমেলা বেগম কালের কণ্ঠকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।তিনি বলেন, ‘আমার সব কিছু শেষ করে দিয়েছে। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই। আরশাদুল ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের অরণ্যপাশা গ্রামের মঞ্জিল মিয়ার ছেলে। তুচ্ছ ঘটনায় ছোট ভাইয়ের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আরশাদুলের ওপর হামলা চালায় প্রতিবেশীরা।
গত শনিবার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় হামলায় আরো ১০ জন আহত হয়। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পাঁচ দিন ধরে ঢাকা মেডিক্যালে চলছিল আরশাদুলের চিকিৎসা। তিনি এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন।স্থানীয়রা জানায়, বাড়ির সামনে একটি জলাশয়ে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে আরশাদুলের ছোট ভাই আহাদের সঙ্গে প্রতিবেশী নবী হোসেনের ছেলে জুনায়েদের কথা-কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে মারামারির ঘটনাও ঘটে। পরে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়। কিন্তু জেদ জমিয়ে রাখে জুনায়েদ। শনিবার দুপুর ২টার দিকে আরশাদুলকে একা পেয়ে বড় ভাই সুজনকে সঙ্গে নিয়ে হামলা চালায় জুনায়েদ। এ সময় আরশাদুলকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে তারা।গুরুতর অবস্থায় আরশাদুলকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের সদস্যরা। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। দায়ের কোপ ও শাবলের আঘাতে আরশাদুলের মাথার খুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।এ ঘটনার ছয় দিন পর নান্দাইল থানায় মামালা করেছেন আরশাদুলের বাবা মঞ্জিল মিয়া। মামলায় ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, রুবেল নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।