জয়পুরহাট প্রতিনিধি জয়পুরহাটে যৌতুকের দাবিতে কলহের জেরে স্বামীর ছোড়া গরম পানিতে ঝলসে গেছে এক গৃহবধূর শরীর। বৃহস্পতিবার রাতে কালাই উপজেলার তালোড়া বাইগুনি গ্রামে গৃহবধূর স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।নির্যাতিত গৃহবধূর নাম সুরাইয়া আক্তার (২২)। তিনি তালোড়া বাইগুনী গ্রামের সুমন মিয়ার স্ত্রী। সুরাইয়া একই গ্রামে ভ্যান চালক আসমান ফকিরের মেয়ে। তাকে রাতেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্বজনরা কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তবে চিকিৎসকরা তার শরীরের অবস্থা বেগতিক বুঝে শুক্রবার দুপুরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্কে উভয় পরিবারের সম্মতিতে এক বছর আগে ২০২২ সালে সুরাইয়ার সঙ্গে সুমন মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে সুমনকে ১ লক্ষ টাকা, এক ভরি সোনা ও বেশ কিছু আসবাবপত্র দেয় সুমাইয়ার পরিবার। বিয়ের পর থেকে সুরাইয়ার স্বামী বারবার তার কাছে আরও যৌতুকের টাকা দাবি করেন। ছয় মাস আগেও সুরাইয়া তার বাবার নিকট থেকে কিছু টাকা এনে দেন। সুমন কোনো কাজ করে না। সব সময় সে বন্ধুদের সঙ্গে তাস খেলে ও আড্ডা মেরে সময় কাটায়। দুই মাস আগেও সুরাইয়ার কাছে পঞ্চাশ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করেন তার স্বামী সুমন। ওই টাকা দিতে না পারায় সুরাইয়াকে মারপিট করে বাবার বাড়িতে পাঠায়। সেইবার থানায় দরবার সালিশের পর সুরাইয়া তার স্বামীর বাড়িতে যায়। এরপর থেকে সুমন অনবরত সুরাইয়াকে তার বাবার নিকট টাকা নিয়ে আসতে ভয়ভীতি ও মারপিট করে আসছে।গত বৃহস্পতিবার রাতে সুরাইয়া স্বামীর বাড়িতে ভাত রান্না করছিলেন। এ সময় স্বামী সুমন টাকা নিয়ে আসছো কি না জিজ্ঞেস করলে সুরাইয়া অপারগতার কথা জানান। ক্ষিপ্ত হয়ে সুরাইয়ার শরীরে ভাতের পাতিলের গরম পানি ছুড়ে মারেন সুমন। এতে তাঁর দুই পা, পিঠ ও দুই হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। খবর পেয়ে সুরাইয়ার বাবা-মা ঘটনাস্থলে এসে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সেখান থেকে উদ্ধার করে মেয়েকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।স্বামী সুমন মিয়া বলেন, রাগের মাথায় আমি স্ত্রীর গায়ে গরম পানি ছুড়ে মেরেছি। তবে হত্যার উদ্দেশ্যে করেননি।কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াসিম আল বারি বলেন, ঘটনাটি আমি অবগত। তবে এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে বা মামলা হলে ব্যবস্থা নিব।