LastNews24
Online News Paper In Bangladesh

মালয়েশিয়ায় এক লাখ কর্মীর চাহিদা, গেছে ১১০০

0

বিশেষ প্রতিনিধি মালয়েশিয়া সরকার গত চার মাসে প্রায় এক লাখ বাংলাদেশি কর্মীর চাহিদাপত্র অনুমোদন করেছে। এর বিপরীতে দেশটিতে গেছেন মাত্র এক হাজার ১০০ জন। কর্মী পাঠাতে দেরির কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো অভিযোগ করছে, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন কর্মীর চাহিদাপত্র সত্যায়নে দীর্ঘ সময় নিচ্ছে। নানা জটিলতাও তৈরি করছে।তবে এ বিষয়ে হাইকমিশনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।ভুক্তভোগীরা বলছেন, নেপালের মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ যেখানে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় কর্মীর চাহিদাপত্র সত্যায়ন করছে, সেখানে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে লাগছে দুই মাসেরও বেশি।রিক্রুটিং এজেন্সির সূত্র জানিয়েছে, সময়মতো প্রয়োজনীয় কর্মী না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছে মালয়েশীয় কম্পানিগুলো। একাধিক কম্পানি বাংলাদেশ হাইকমিশনের অসহযোগিতার বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকারের কাছে নালিশও করেছে। এতে বাংলাদেশের প্রতি কম্পানিগুলোর নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।বর্তমানে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানির সঙ্গে যুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর সূত্র জানায়, প্রায় এক লাখ কর্মীর চাহিদাপত্রের মধ্যে এ পর্যন্ত হাইকমিশন মাত্র ২৮ হাজার সত্যায়ন করেছে। এর মধ্যে ১৬ হাজার কর্মীর ভিসা হয়েছে, যাঁদের মধ্য থেকে মাত্র এক হাজার ১০০ জন কর্মী মালয়েশিয়া পৌঁছতে পেরেছেন। ৪০ হাজার কর্মী এখনো সত্যায়নের জন্য অপেক্ষমাণ। অন্যরা আবেদন করেননি।সূত্র বলেছে, আবেদনের ক্রম অনুযায়ী ভিসা দিচ্ছে মালয়েশিয়া। কিন্তু হাইকমিশনের ক্রম-জটিলতার কারণে যেসব কম্পানির কর্মী আগে দরকার, তারা পাচ্ছে দেরিতে।সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, মালয়েশিয়ার সেলেঙ্গরে অবস্থিত ‘কায়নান এসডিএন বিএইচডি’ নামক একটি কম্পানির জন্য ৯০০ বাংলাদেশি কর্মীর নিয়োগপত্র অনুমোদন দিয়েছে দেশটির সরকার। সে অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াও চূড়ান্ত করেছে। এমনকি তাঁদের মধ্যে ৭০০ কর্মী বাংলাদেশ ছাড়ার জন্য প্রস্তুত। কিন্তু হাইকমিশনের ক্রম অনুযায়ী এসব কর্মী এখনই মালয়েশিয়ার উদ্দেশে দেশত্যাগের জন্য ‘উপযুক্ত’ না। কম্পানির প্রতিনিধি বারবার যোগাযোগ করেও হাইকমিশন থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন না।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে কল ও খুদে বার্তা পাঠিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। তবে বিএমইটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীর খায়রুল আলম কথা বলেছেন কালের কণ্ঠের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো মন্ত্রণালয়ের শর্ত অনুযায়ী আবেদন করছে না। আবেদনকারীর সংখ্যাও কম। আমাদের মনে হয়, কর্মী নির্বাচনে এজেন্সিগুলোর সমস্যা হচ্ছে। আবেদন না করলে প্রক্রিয়া শেষ করার সুযোগ নেই।ভিসা সত্যায়ন প্রসঙ্গে খায়রুল আলম বলেন, ‘এটা তো আমাদের হাতে নেই। মন্ত্রণালয় যেহেতু নিয়োগানুমতি দিয়ে শর্ত দেয়, সেই শর্ত পূরণ হলে আমরা ছাড়পত্র দিই। এখন সমস্যা হলে তাদের (মন্ত্রণালয়) দৃষ্টি আকর্ষণ করা উচিত।প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মসংস্থান অনুবিভাগের দায়িত্বে আছেন যুগ্ম সচিব আব্দুল আওয়াল। তিনি ‘নতুন যোগদান করেছেন’ জানিয়ে এই বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা জানান।তবে এ অনুবিভাগে দীর্ঘদিন দায়িত্বে থাকা উপসচিব গাজী মো. শাহেদ আনোয়ার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দূতাবাস সত্যায়ন যা দিচ্ছে, তা কোথাও আটকে থাকছে না। এজেন্সিগুলোর কর্মী পাঠানোর বিষয়ে আগ্রহ কম।চার বছর বন্ধ থাকার পর দুই দেশের সরকার পর্যায়ে নিবিড় যোগাযোগের ফলে মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার খুলেছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে দ্রুত কর্মী পাঠাতে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু গত চার মাসে নেপাল প্রায় এক লাখ কর্মী পাঠিয়েছে মালয়েশিয়ায়। বাংলাদেশ পাঠাতে পেরেছে এক হাজার ১০০ জন।এসব বিষয়ে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের শ্রম বিভাগের মিনিস্টার নাজমুস সাদাত সেলিমকে হোয়াটসঅ্যাপে প্রশ্ন পাঠানো হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি।

About Author

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More