আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ এই সপ্তাহে মার্কিন কংগ্রেসে তার ‘বিগ বিউটিফুল বাজেট বিল’ পাস হওয়ায় উল্লসিত ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু এর সঙ্গে সঙ্গেই আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বহুদিনের একটি পুরনো প্রশ্ন- এই বিপুল ঋণের ভার যুক্তরাষ্ট্র কতদিন বহন করতে পারবে? ট্রাম্পের এই ট্যাক্স-কর্তন বাজেট বিলটি যুক্তরাষ্ট্রের ঋণের বোঝায় কমপক্ষে ৩ ট্রিলিয়ন ডলার যুক্ত করবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে— যুক্তরাষ্ট্রকে ঋণ দিতে তাদের ধৈর্যের সীমা কোথায়? এই সন্দেহ প্রতিফলিত হচ্ছে ডলারের দরপতন ও মার্কিন সরকারের ঋণের সুদের হার বৃদ্ধিতে। চলতি বছরের শুরু থেকে ডলারের মান ব্রিটিশ পাউন্ডের তুলনায় ১০ শতাংশ এবং ইউরোর তুলনায় ১৫ শতাংশ কমেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আয় ও ব্যয়ের মধ্যে যে বিশাল ফারাক, তা পূরণ করতেই বারবার নতুন করে ঋণ নিতে হচ্ছে দেশটিকে। আর এই ঋণের বিপরীতে দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি সুদের হারের ব্যবধানও বেড়েছে, যা অর্থনীতিতে ‘ইয়িল্ড কার্ভ স্টীপেনিং’ নামে পরিচিত। এটি ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের ঋণ শোধের সক্ষমতা নিয়ে সংশয় বাড়িয়ে তুলছে।
বিষয়টি আরো উদ্বেগজনক, কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র সুদের হার কমানোর বিষয়ে অনেক বেশি ধীর গতিতে এগোচ্ছে। সাধারণত এতে ডলার আরো শক্তিশালী হওয়ার কথা, কারণ ব্যাংকে ডলার জমা রাখলে উচ্চ সুদ মেলে কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।
বিশ্বের বৃহত্তম হেজ ফান্ডের প্রতিষ্ঠাতা রে ডালিও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এখন একটি চূড়ান্ত মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। বর্তমান ধারায় চললে শিগগিরই দেশটি বছরে ১০ ট্রিলিয়ন ডলার ঋণ ও সুদ পরিশোধে খরচ করবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘যদি এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে এমন এক পর্যায় আসবে, যেখানে এই ঋণ আর নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে না এবং ভয়ংকর আর্থিক বিপর্যয় দেখা দেবে।’
রে ডালিও তিনটি সম্ভাব্য ‘ভয়ঙ্কর পরিণতির’ দিক তুলে ধরেছেন। সেগুলো হলো, সরকারি ব্যয় ব্যাপকভাবে কমানো, অথবা বড় আকারে কর বৃদ্ধি—অথবা দুটোই একসঙ্গে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.