ষ্টাফ রিপোর্টার/- সম্প্রতি ফ্রান্সে মহানবীর (সা.) কার্টুন প্রদর্শন এবং এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইসলামবিদ্বেষ ছড়ানোর বিষয়ে গতকাল শনিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে ভার্চুয়ালি বৈঠক করে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটি।
রোববার (১ নভেম্বর) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নীতিগত এ অবস্থান তুলে ধরে বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে কোনো ধর্মীয় নেতার অবমাননা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না বলে জানিয়েছে বিএনপি। তারা মহানবীর (সা.) কার্টুন প্রকাশকে একটি গর্হিত অপরাধ আখ্যা দিয়ে এর তীব্র নিন্দাও জানিয়েছে।
বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, পবিত্র ধর্ম ইসলাম এবং মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর ব্যঙ্গচিত্র প্রকাশ ও তার পক্ষে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের (এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ) অবস্থান গ্রহণকে কেন্দ্র করে সারাবিশ্বের ২০০ কোটিরও বেশি মুসলমানসহ সকল ধর্ম-বর্ণের যুক্তিবাদী ধর্মপ্রাণ মানুষ এবং বিভিন্ন রাষ্ট্র যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে চলেছে, বিএনপি তার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করছে।
তিনি বলেন, সব ধর্মের মানুষের বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল বিএনপি মনে করে যে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার নামে কোনো র্ধমনেতার অবমাননা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। রাসূল পাক (সা.)-এর কার্টুন প্রকাশকে বিএনপি তাই একটি গর্হিত অপরাধ বলে গণ্য করে এবং তীব্র নিন্দা জানায়।
‘একইভাবে ধর্মীয় সহিষ্ণুতায় বিশ্বাসী বিএনপি মনে করে যে, মহানবী (সা.)-এর কার্টুন প্রকাশ ও তা সমর্থন করা যেমন ধর্মবিদ্বেষকে উসকে দেয়ার মত অপরাধ, তেমনি প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে মানুষ হত্যাও গ্রহণযোগ্য নয়। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার মহান ব্রত নিয়ে যিনি মানবতার ধর্ম ইসলাম প্রচার করেছেন সেই মহানবী (সা.)-এর দীক্ষাই হোক আমাদের পথ-নির্দেশক।’
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির ওই ভার্চুয়াল বৈঠকে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু অংশ নেন।
ফখরুল জানান, বিএনপি মনে করে যে, পবিত্র ধর্ম ইসলাম ও মহানবী (সা.)-এর অনুসারীদের আবেগকে আহত করে বিশ্বব্যাপী যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে তা গোটা মানবজাতির ঐক্য ও মিলনের জন্য এক অনতিক্রমনীয় হুমকিতে পরিণত হয়েছে। এই সংকট থেকে বেরিয়ে আসার এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মূল্যবোধকে স্বীকৃতি দেয়ার মত মানবিক ও গণতান্ত্রিক দায়িত্ব পালনের জন্য ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকেই উদ্যোগী হতে হবে। কারণ, ঘৃণা ও সন্ত্রাস কোনোটাই বিশ্ববাসীর কাম্য নয়।