আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের জিরিবাম ও বিষ্ণুপুর জেলায় নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় জিরিবাম বিভাগে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ড্রোন ও রকেট হামলার পাশাপাশি ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনায় পাঁচজন নিহত ও আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
জিরিবামের বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট জরুরি অবস্থার নির্দেশনা জারি করে জানিয়েছেন, জরুরি অবস্থা চলাকালীন একসঙ্গে পাঁচজন বা তারও বেশি মানুষ একত্রিত হতে পারবেন না এবং কারো কাছে কোনো ধরনের অস্ত্র বহন করার অনুমতি নেই। পিস্তল, তলোয়ার, লাঠি, পাথর এবং যে কোনো ধারালো বস্তু বহন করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া অনুমতি ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না বলেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এমনকি বিয়ে অনুষ্ঠান বা মরদেহের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আয়োজনের ক্ষেত্রেও ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশের এসপির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। সরকারি অনুমতি ছাড়া এ ধরনের কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শনিবার মণিপুরের জিরিবাম জেলায় বিদ্রোহীদের গুলিতে একজন ঘুমন্ত ব্যক্তি নিহত হন। এরপর আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে বিদ্রোহীদের বন্দুকযুদ্ধে চারজন সশস্ত্র বিদ্রোহী নিহত হন। মণিপুর পুলিশ জানিয়েছে, বিদ্রোহীরা জেলার সদর থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরের বিচ্ছিন্ন এক এলাকায় বসবাসকারী এক ব্যক্তির বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করেছে।
এ ঘটনার পর বিদ্রোহীদের সাথে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ব্যাপক গোলাগুলি হয়, যেখানে অন্তত চার বিদ্রোহী নিহত হয়েছেন। এছাড়া শুক্রবার বিদ্রোহীদের রকেট হামলায় এক বয়স্ক ব্যক্তি নিহত ও পাঁচজন আহত হন, যার পর থেকেই রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মণিপুরে মেইতে সম্প্রদায় এবং কুকি-জো উপজাতিদের মধ্যে চলমান সহিংসতা গত বছরের মে মাসে শুরু হয়, যার ফলে দুই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি এবং প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। যদিও মাঝেমধ্যে সহিংসতা চলতে থাকে, তবে এবারই প্রথমবারের মতো ড্রোন ও রকেট ব্যবহার করে হামলা চালানো হলো।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে এনই