কামাল হোসেন: গণআন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য ভারত সরকারের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ সৃষ্টি হচ্ছে, যা নয়াদিল্লির জন্য একটি কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম দ্য ডিপ্লোম্যাট এ বিষয়ে একটি বিশদ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ-ভারত প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী, শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত আইনি বাধ্যবাধকতায় রয়েছে। চুক্তিতে বলা আছে, যদি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ থাকে যার শাস্তি এক বছরের বেশি হতে পারে, তবে তাকে ফেরত দিতে হবে। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বর্তমানে হত্যা, নির্যাতন, গুম, গণহত্যা, এবং মানবতাবিরোধী অপরাধসহ শতাধিক মামলা রয়েছে।
তবে চুক্তির ৬ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো দেশের ধারণা হয় যে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মামলা করা হয়েছে, তাহলে তাকে ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এই ধারা বিশেষ কিছু অপরাধ, যেমন হত্যা এবং সন্ত্রাসবাদ, রাজনৈতিক অভিযোগ হিসেবে বিবেচনা করতে নিষেধ করে। ফলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো এই ধারা দ্বারা প্রতিহত হতে পারে না।
অন্যদিকে, ৮ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো মামলা অসৎ নিয়তে করা হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন নেই। ভারত এই ধারা ব্যবহার করে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
তবে শেখ হাসিনাকে ফেরত না দিলে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে, শেখ হাসিনার আশ্রয় নিয়ে নয়াদিল্লির জন্য একটি কঠিন কূটনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
— সূত্র: দ্য ডিপ্লোম্যাট