আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরে আবারও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে, যা অন্তত ছয়জনের প্রাণহানি ঘটিয়েছে। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজ্যের জিরিবাম জেলায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সন্দেহভাজন কুকি বিদ্রোহীরা নুংচাপ্পি গ্রামে আক্রমণ চালালে ৬৩ বছর বয়সী ইউরেম্বাম কুলেন্দ্র সিং নামে এক ব্যক্তি নিহত হন। গ্রামটি মণিপুরের রাজধানী ইম্ফাল থেকে প্রায় ২২৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এছাড়া মেইতি সম্প্রদায়ের সশস্ত্র দল ও কুকি উপজাতিদের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধে আরও পাঁচজন নিহত হন। এই সশস্ত্র দলগুলো নিজেদের ‘গ্রাম প্রতিরক্ষা স্বেচ্ছাসেবক’ বলে পরিচয় দিয়ে থাকে।
পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, ঘটনার খবর পেয়ে জিরিবামের পুলিশ সুপারসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরও লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। পুলিশ পাল্টা জবাব দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগের দিন, শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) মণিপুরের মইরাং শহরে কুকি বিদ্রোহীদের রকেটচালিত বোমা হামলায় মেইতেই সম্প্রদায়ের একজন বয়স্ক ব্যক্তি নিহত হন এবং ছয়জন আহত হন। এই ঘটনার পর শনিবার থেকে রাজ্যের স্কুলগুলো বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১ সেপ্টেম্বরও রাজ্যে সহিংসতায় দুজন নিহত এবং পুলিশ ও সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। কুকি সন্ত্রাসীরা মেইতেই গ্রামে হামলা চালালে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানায়, সন্ত্রাসীরা পাহাড়ের ওপর থেকে উপত্যকার দিকে নির্বিচারে গুলি চালায় এবং উচ্চপ্রযুক্তির ড্রোন ব্যবহার করে রকেট প্রোপেলড গ্রেনেড (আরপিজি) নিক্ষেপ করে।
২০২৩ সালের মে মাস থেকে মণিপুরে জাতিগত সহিংসতা চলছে, যা মাঝে কিছুটা শান্ত হলেও কখনোই পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। ইম্ফাল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই জনজাতি সম্প্রতি তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি দাবি করে, যার বিরোধিতা করে স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি ইস্যু ছাড়াও সংরক্ষিত জমি ও জরিপ সংক্রান্ত বিরোধের কারণেও উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়। এ সহিংসতায় এ পর্যন্ত কয়েকশ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
সূত্র: এনডিটিভি