বরিশাল প্রতিনিধি ॥ জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় বাসস্ট্যান্ড নেই। বরিশাল -পটুয়াখালী মহাসড়কই এখন বাস স্ট্যান্ড পরিনত হয়েছে। বাস স্ট্যান্ড না থাকায় শ্রীমন্ত নদীর ব্রিজ থেকে শুরু করে সরকারি বাকেরগঞ্জ কলেজে পর্যন্ত রাস্তার ধারে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলে বাস। কে আগে যাত্রী তুলবে তা নিয়েও চলে রেষারেষি। তার মাঝে পড়ে প্রাণও যাচ্ছে অনেকেরই। তারপরেও হুঁশ নেই প্রশাসনের।
গত ৫ জানুয়ারি বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের সরকারি বাকেরগঞ্জ কলেজর সামনে সড়কে বাস চাপায় রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের বিরঙ্গল গ্রামের মোতালেব হাওলাদারের ছেলে আসলাম হাওলাদার (২৮) নামের এক যুবক নিহত হয়। শুধু এটিই নয়, এই স্থানে ছোট-বড় দুর্ঘটনায় অনেকেরই প্রাণ যাচ্ছে। জখমও হচ্ছেন অনেক। বাকেরগঞ্জ নামে মাত্র স্ট্যান্ডের রাস্তা চার ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। একদিকের রাস্তা বরিশাল টু পটুয়াখালী ও অন্য দিকের রাস্তা বাকেরগঞ্জ টু বরগুনা মির্জাগঞ্জের গিয়েছে। তৃতীয় রাস্তাটি গিয়েছে বাকেরগঞ্জ সদর রোডে। বাকেরগঞ্জ ১৪ টি ইউনিয়নের ১০টি ইউনিয়নের সব কয়টি রুটের যানবাহন প্রতিদিন সদর রোড দিয়ে চলাচল করে। বাকেরগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষ আধুনিক বাস স্টান্ড তৈরি করলেও শ্রীমন্ত নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ করায় রাস্তা প্রশস্ত হয়ে বাস স্ট্যান্ড হারিয়ে গেছে। বাসস্ট্যান্ডের কিছু অংশ ফাঁকা থাকলেও অবৈধভাবে দোকানপাট নির্মাণ করে দখল করে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। বাকেরগঞ্জ এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বাসস্ট্যান্ড গড়ে তোলার দাবি বাকেরগঞ্জ বাসির দীর্ঘদিনের।অপরদিকে বাকেরগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড না থাকার পাশাপাশি যাত্রী ছাউনিও নেই। সাধারণ যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উপজেলার পৌর কাচাঁবাজারের উপর দিয়ে যাওয়া মহাসড়কের পশ্চিম দিকে পাদ্রিশিবপুর,মহেশপুর,নিয়ামতি হয়ে বরগুনা জেলার সাথে সংযোগ হয়েছে। এছাড়াও বাকেরগঞ্জ টু মির্জাগঞ্জ উপজেলার সাথে সংযোগ হয়েছে। বরিশাল – ঢাকা মহাসড়ক থাকায় দূরপাল্লার ও অভ্যন্তরীণ রুটের শত শত যাত্রীদের প্রতিনিয়ত বিড়ম্বনা শিকার হতে হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষাকালে,প্রচন্ড রোদ-বৃষ্টিও ঝড়-ঝঞ্জায় সাধারণ যাত্রীদের দোকানপাট, মার্কেট ও মসজিদের সামনে আশ্রয় নিতে হয় ও ঘন্টার পর ঘন্টা,দাড়িয়ে থাকতে হয় যানবাহনের জন্য।
প্রতিদিন এ সড়কে দিয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলা ও রাজধানী শহর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন রুটের অসংখ্য দূরপাল্লার পরিবহন ও অভ্যন্তরীন যানবাহন বাকেরগঞ্জ থেকে প্রতিনিয়ত শত শত যাত্রী চলাচল করায় এই স্থান সব সময় জনসমাগমে ব্যস্ত থাকে। মালেল আলী নামে এক যাত্রী বলেন, সরকারি ভাবে যেখানে বাস স্ট্যান্ড ছিলো এখন সেখানে কোনো দূরপাল্লার বাস থামে না। পৌর কর্তৃপক্ষ যে বাস স্ট্যান্ড ও যাত্রী ছাউনি নির্মান করেছিলো সেটি এখন স্থায়ী দোকানঘর করা হয়েছে। তাই বর্তমানে নামে মাত্র বাস স্ট্যান্ডে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকতে হয় যাত্রী দের। বিরক্ত কর একটি নামে মাত্র স্ট্যান্ড এটি, এখানে একটি বাস স্ট্যান্ড ও যাত্রী ছাউনি একান্ত প্রয়োজন।জনসাধারণের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌছাতে বাসের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকতে হয় রাস্তায়। সড়কের দু’পার্শ্বে দোকান পাট গড়ে উঠায় রিক্সা, ভান টেম্পো, সিএনজি অটোরিক্সা,থ্রি হুইলার অনির্ধারিত স্ট্যান্ড তৈরীর কারনে বাস মিনিবাসের যাত্রী সাধারনের নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌছাবার জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকার জন্য নিরাপদ কোন স্থান নেই। যার ফলে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে।বাকেরগঞ্জ সদর রোডের ব্যাবসায়ি রাশেদ খান জানান, এই বাকেরগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড ও যাত্রী ছাউনি না থাকায় যাত্রীদের এক এক জায়গায় এক এক দোকানের বেঞ্চে বসে থাকতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা। জন দুর্ভোগে লাঘবে বাস স্ট্যান্ড, যাত্রী ছাউনি ও পাবলিক টয়লেট একান্ত প্রয়োজন। বাকেরগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড ও যাত্রী ছাউনি না থাকায় পুরুষ যাত্রীদের চেয়ে মহিলা যাত্রীদের দুর্ভোগের অনেক বেশি। বিশেষ করে পাবলিক টয়লেট না থাকায় মহিলা যাত্রীদের ব্যাপক অসুবিধা পোহাতে হয়। রাতের বেলায় এসব যাত্রীদের মারাত্মক বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে।