বিশেষ প্রতিবেদকঃ বাংলাদেশের নদীর ফ্রী ইলিশের দাম বেশি। ক্রেতা বেশি মাছ কম,দাম কেজির পরিমানে বড়টা ১৮ থেকে ২২ শত। বন্ধুত্ব বজায় রাখা জরুরি মনে করে১১৮০ টাকা দরে ভারতে রপ্তানি হয়েছে বাংলাদেশের ইলিশ মাছ। আর ভারতে ২ হাজার টাকা কেজি।পদ্মা নদীর পাড়ে বড় হওয়া রাজশাহী, যশোর, খুলনা, বরিশাল, চাঁদপুর আর বিক্রমপুরের বাঙালদের ইলিশের স্মৃতি তাঁদের চলচ্চিত্র, সাহিত্য ও কবিতায় ঠাঁই পায়।যে কারণে বুদ্ধদেব বসুর ইলিশকে ‘জলের উজ্জ্বল শস্য’ নামে চিহ্নিত করে কবিতা লেখা আর আনন্দবাজার পত্রিকায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ইলিশ নিয়ে হাহাকার করে একের পর এক লেখা ছাপা হয়। এসব লেখা সেই দেশভাগের স্মৃতিকে যেন উসকে দেওয়ার কথাই মনে করে দেয়। এখনো বর্ষায় পশ্চিমবঙ্গের পত্রিকা আর টেলিভিশন চ্যানেলে ইলিশ বন্দনা করা হয়।১৯৭১ ও ১৯৭২ সালে প্রশাসন ও গবেষণার দায়িত্বে থাকা দেশের শীর্ষস্থানীয় ও প্রবীণ মৎস্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে।যাঁদের অনেকেই ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের জাতীয় মাছ, ফল, ফুল, প্রাণীসহ নানা কিছু নির্বাচনের সময়ের সাক্ষী হয়ে আছেন। তবে তাঁদের অধিকাংশই ইলিশকে জাতীয় মাছ করার একক কোনো কারণ বলতে পারেননি। কারণ, ঐতিহাসিকভাবে দেশের নদ-নদীতে ইলিশ ছাড়াও রুই, কাতলা, বোয়াল, কই, চিংড়ি, পোয়া থেকে শুরু করে পুঁটি-ট্যাংরা মাছও জনপ্রিয় ছিল। ওই সময় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা এসব ব্যক্তিরা একটি ব্যাপারে একই ধরনের মতামত দিয়েছেন, তা হচ্ছে এই সময়ে এসে ইলিশ নিয়ে যতটা মাতামাতি দেখা যায়, ষাট বা সত্তরের দশকে ততটা ছিল না। ইলিশ জনপ্রিয় ছিল বটে, তবে একই ধরনের জনপ্রিয় মাছ আরও ছিল।২০১৬ সালে পটুয়াখালীতে পুকুরে ইলিশের চাষ শুরু হয়েছে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিসের অর্থায়নে উপকূলীয় মৎস্য প্রকল্পের আওতায় বংশবিস্তারে পুকুরে ইলিশের চাষ করছে পটুয়াখালী মৎস্য গবেষণা কেন্দ্র।কলাপাড়ার আন্ধারমানিক নদী থেকে গভীর বঙ্গোপসাগরের উদ্দেশে রওনা হন পটুয়াখালী মৎস্য গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল হক ও তার সহকর্মীরা। উদ্দেশ্য তিন থেকে চার মাস বয়সী ইলিশের পোনা সংগ্রহ।পোনা সংগ্রহ শেষে স্পিডবোটে বিকেল ৩টায় উপকূলে গবেষণা কেন্দ্রে ফেরত আসে পুরো দল। পরে পলিথিনের ব্যাগ থেকে গবেষণাগারের ৯টি পুকুরে ছাড়া হয় পোনা ইলিশ।দায়িত্বরতরা জানান, এসব পুকুরে প্যাটেল হুইল অ্যারোটল দিয়ে কৃত্রিম ঢেউ সৃষ্টি করে পোনার স্বাভাবিক চলাচলের গতি ঠিক রাখা হয়। পাশাপাশি এয়ার ব্লোয়ার দিয়ে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়। বিভিন্ন মজুত ঘনত্ব দেওয়ার জন্য ৯টি পুকুরে ৩টি ট্রিটমেন্ট এবং ৯টি রেফ্রিগেশনের মাধ্যমে পোনাগুলোকে সচল রাখার চেষ্টা করা হয়।এদিকে, পুকুরে ইলিশ চাষের এ উদ্যোগে খুশি উপকূলীয় এলাকার জেলেরা। তারা জানান, এভাবে সাগরের ইলিশ পুকুরে চাষ করা গেলে মাছ শিকারে আর গভীর সমুদ্রে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যেতে হবে না।আজও কোন খবর নাই এসব গবেষণার কাজের।দাম চড়া মৌসুমে ইলিশ মাছ।১ হাজার টাকা ধরে বিক্রি করলেও ৫০০ টাকা লাভবান হবেন মৎস্য পেশাজীবি শ্রমিক। কারন এ মাছ তো কেহ চাষ করেনা। ফ্রী স্টাইল ধরা হচ্ছে। কেন এত দাম কেন।২০০৬ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে দেশে ইলিশের উৎপাদন দুই লাখ টন থেকে প্রায় ছয় লাখ টনে পৌঁছায়। ঢাকা শহরের মধ্যবিত্তের পাশাপাশি মফস্বলের মধ্যবিত্ত, এমনকি গ্রামীণ মধ্যবিত্তের পাতে ইলিশ স্থান পেতে থাকে। এভাবে ৭০-এর দশকের শুরুতে দেশের দরিদ্র মানুষের প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণের ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হওয়া ইলিশ এক সময় উচ্চবিত্তের মৎস্য বিলাসে পরিণত হয়। ২০১৫ সালের পর ইলিশের উৎপাদন বেড়ে, দামও কিছু কমে গিয়ে তা মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যে চলে আসে। বাংলাদেশের মানুষের আত্মপরিচয়ের প্রতীক ও জাতীয়তাবাদী গর্বের উপাদান হয়ে ওঠা ইলিশ সত্যিকার অর্থে জাতীয় মাছ হয়ে ওঠে।বর্তমানে ১৮ থেকে ২২ শত টাকায় পাওয়া যাচ্ছে ইলিশ দেড় কেজি ওজনের মাছ। ভারত বন্ধু বাংলাদেশের। এটা আবারো প্রমাণ করল সরকার।
Next Post