বিশেষ প্রতিবেদকঃ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে কয়জন শেয়ার মার্কেট ধ্বংসের কারিগর তাদের মধ্যে শাকিল রিজভী অন্যতম। তিনি তার সিকিউরিটিজ ব্রোকারেজ হাউস ‘শাকিল রিজভী সিকিউরিটিজ হাউজ’-এর মাধ্যমে বিগত সরকারের উচ্চ পদস্থ আমলা, সরকারি-বেসরকারি অফিসার ও ডিফেন্স কর্মকর্তাদের পোর্টফোলিও নিয়ন্ত্রণ হতো। বিগত সরকারের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত ও খাইরুলের সাথে ব্যাপক সক্ষতার কারণে শেয়ার বাজারে দর ওঠানামা নিয়ন্ত্রণ করে, বিপুল পরিমাণ কালো টাকার মালিক হয়েছেন এই ‘শাকিল রিজভী হাউসে’র শাকিল।
- Advertisement -
বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে সাধারণ মানুষের টাকা লোপাট করে নিজে এবং আমলাদেরকে বানিয়েছেন শত শত কোটি টাকার মালিক। গণমাধ্যমে ব্যাপক লেখালেখির পরেও তিনি এখনো রয়েছেন বহাল তবিয়তে। অভিযোগ রয়েছে, শাকিল রিজভী হাউসে যতজন গ্রাহক শেয়ার বেচাকেনা করতো তাদের প্রত্যেককে জিম্মী ও হয়রানি করে বাধ্য করত তাদের পছন্দ অনুযায়ী শেয়ার কেনাবেচা করতে। গত কিছুদিন আগে শাকিল রিজভীসহ বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে যারা শেয়ারবাজার লুটপাট ও ধ্বংসের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দুদকে অনুসন্ধান ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে দুদকে আবেদন করেন ভুক্তভোগী গ্রাহক ও সর্বস্বহারা বিনিয়োগকারীরা, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
শাকিল রিজভী ছাগল-কাণ্ডে আলোচিত মতিউর, আবুল খায়ের হিরোসহ একটি চক্রের মাধ্যমে এই পুঁজিবাজার থেকে সিন্ডিকেট করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমনই একজন ভুক্তভোগী গ্রাহক বিধবা নারী জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনিও শাকিল রিজভীর বিরুদ্ধে হয়রানির কথা উল্লেখ করে গণমাধ্যমে অভিযোগ করেন। বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাথে আলাপকালে জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ‘এই শাকিল রিজভী সিকিউরিটিজ আমাকে গত তিনমাস যাবত হয়রানি করে আসছে। আমার স্বামীর মৃত্যুর পর তার উত্তরাধিকারী হিসাবে আমি এবং আমার সন্তানদের শেয়ার আদালতের অনুমতি নিয়ে আসার পরেও বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। বরং বিভিন্ন তালবাহানা করে দিনের পর দিন হয়রানি করে আসছেন। তাদের কাছে বললে বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে দিনের পর দিন সময়ক্ষেপণ করছেন ‘
তিনি বলেন, ‘আমার সন্তানদের শেয়ারগুলো বুঝিয়ে না দিয়ে দায় চাপিয়ে দিচ্ছেন সিডিবিএল এর উপর। অথচ আমরা শুনেছি এই প্রতারক শাকিলই সিডিবিএল এর সাথে সম্পৃক্ত। এ সমস্ত প্রতারক ও দুর্বৃত্তদের আমি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। যদি দু’একদিনের মধ্যে কোর্টের পারমিশন অনুযায়ী আমার শেয়ারগুলো বুঝিয়ে না দেওয়া হয়, তাহলে আমি শাকিল রিজভীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করব এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে শাকিল রিজভীর গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করব।’
ভুক্তভোগী জান্নাতুল ফেরদৌস আরও বলেন, ‘শাকিল রিজভীর অবহেলা ও চক্রান্তের কারণে আমি ও আমার পিতৃহারা সন্তানদের প্রায় পাঁচ থেকে সাত কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। আমি এই শেয়ারবাজার ধ্বংসের কারিগর প্রতারক সিন্ডিকেট শাকিল রিজভীর শাস্তি দাবি করছি।’