LastNews24
Online News Paper In Bangladesh

প্রেমের টানে আমেরিকান যুবক গাজীপুরে

0

গাজীপুর প্রতিনিধি ॥ প্রেমের টানে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে এসে গাজীপুরের তরুণীকে বিয়ে করলেন মিশৌরী স্টেটের ক্যানসাস সিটির নাগরিক রাইয়ান কফম্যান। প্রেমিকা সাইদা ইসলাম (২৬) গাজীপুর মহানগরের বাসন থানাধীন ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকার মোশারফ হোসেন মাস্টারের নাতনী ও মৃত সিকান্দর আলীর মেয়ে। বিয়ের কথা শুনে আশেপাশের লোকজন গাজীপুরে সাইদার নানা বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন।কণের নানা মোশারফ হোসেন মাস্টার জানান, ২০১৯ সালে মারা যান ঢাকার দনিয়া এলাকার বাসিন্দা সিকান্দর আলী। বাবার মৃত্যুর পর মা ও তার ছোট বোনের সঙ্গে সাইদা ঢাকা থেকে চলে আসেন গাজীপুরের ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকায় নানা মোশারফ হোসেন মাস্টারের বাড়িতে। এখানেই বসবাস করছেন তারা। বাবা মারা যাওয়ার এক বছর পর ২০২০ সালে মানবিকে স্নাতক করেন সাইদা।সাইদা জানান, ২০২১সালে এপ্রিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ডেটিং অ্যাপসে) প্রথম পরিচয় রাইয়ান কফম্যানের সঙ্গে। তারা নিজেদের ফোন নম্বর, ফেস বুক আইডি ও ঠিকানা বিনিময় করেন। এরপর থেকে নিয়মিত যোগাযোগ হতো তাদের মধ্যে। ফেসবুক ও ফোন নম্বরে ও ভিডিও কলে কথা বলতে বলতে নিজেরা আরও ঘনিষ্ট হন। কথা হতো ভিডিও কলে। এভাবে কথা বলতে বলতে দুইজন দুইজনকে ভালবেসে ফেলেন। প্রায় এক বছর তারা ফেসবুকেই চুটিয়ে প্রেম করেন। এভাবে ব্যক্তি সম্পর্ক পারিবারিক সম্পর্কে রূপ নেয়। শেষে দু’জনে সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করার।

তিনি আরো জানান, বিয়ে করার জন্য রাইয়ান তার দেশেই খৃষ্ট ধর্ম ত্যাগ করে যথানিয়মে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে তার ও সাইদার পরিবারের সম্মতিতে গত ২৯ মে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উড়ে বাংলাদেশে আসেন তিনি। এদিনই দুইজনের সঙ্গে প্রথম দেখা হয়। এরপর সেখান থেকে সাইদার সঙ্গে সোজা গাজীপুরে নানার বাড়িতেই ওঠেন রাইয়ান কফম্যান। সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি অনুয়ায়ি বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে করেন তারা। তিনি এখন গাজীপুর মহানগরের বাসন থানার ভোগড়া মধ্যপাড়া বাজারের পাশেই মোশারফ মাস্টারের বড়িতে অবস্থান করছেন।সাইদার নানা জানান, বাংলাদেশে আসার আগেই বিয়ের গহনা ও কাপড়-চোপড়সহ মোবাইল ফোন কেনার জন্য সাইদার কাছে অর্থ পাঠান রাইয়ান। বাংলাদেশে রাইয়ানের আসার আগেই ওই অর্থ দিয়ে বিয়ের প্রয়োজনীয় কেনা-কাটাও সম্পন্ন করেন সাইদা। শুক্রবার (৩জুন) এ নব দম্পতি কেনা-কাটা করতে স্থানীয় চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার বাজারে যান।

রাইয়ান এ দেশের বাজারের পরিবেশ নিয়ে এক মন্তব্যে বলেন, খুবই জনাকীর্ণ ও গোলমেলে। রাস্তা-ঘাটের পরিবেশ খুবই নোংরা। তবে সাইদার স্বজন ও বাংলাদেশীদের বিষয়ে তার অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করতে গিয়ে রাইয়ান বলেন, বাঙ্গালীরা খুবই অতিথি পরায়ন। আমেরিকায় অচেনাদের সঙ্গে কেউ খুব একটা কথা বলে না। কিন্তু বাংলাদেশে আসার পর দেখছি আমার প্রতি সবাই খুবই আন্তরিক। আমার ক্ষুধা না লাগতেই লোকজন আমাকে খাওয়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন, আদর, আপ্যায়ন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ছেন। যা আমেরিকায় বিরল।বিয়ে পর সাইদাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান রাইয়ান। রাইয়ান জানান, অনুসাঙ্গিক কাগজ-পত্র (কে-ওয়ান) ভিসা প্রসেসিং করতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। এসব সম্পন্ন হলেই সাইদাকে আমেরিকা নিয়ে যাবেন। পরে সেখানেই তারা সংসার ধর্ম পালন করবেন। রাইয়ান আমেরিকার নিজ এলাকায় একটি প্লাস্টিক পণ্য তৈরির কারখানায় অপারেটর পদে কাজ করেন। লেখাপড়া মাধ্যমিক স্কুল পর্যন্ত। তার মা-বাবা ছাড়াও এক বড় ভাই রয়েছেন। তারা সেখানে প্রত্যেকেই আলাদাভাবে বসবাস করেন।এদিকে সুদূর আমেরিকা থেকে ৬ফুট উচ্চতার সুদর্শন যুবক গাজীপুরে এসে স্থানীয় এক তরুনীকে বিয়ের খবরে উৎসুক জনতা সাইদার নানা বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন।

About Author

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More