বিশেষ প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় মনোবলের কারণেই নির্মিত হয়েছে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প পদ্মা সেতু। যা আজ বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। বাঙালী আজ বিশ্বের কাছে গর্ব করে বলতে পারছেন দেশ-বিদেশের সকল ষড়যন্ত্রকে পিছু ফেলে নিজেদের অর্থায়নে আমরাও পারি।গত ১৪ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অক্লান্ত পরিশ্রম করে নিজের গতিশীল ও বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্বের কারণেই আজ বাঙালী বিশ্বপরিমন্ডলে একটি সম্মানজনক স্থানে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। আগামী ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধণকে সামনে রেখে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসীর মধ্যে আনন্দ ও উচ্ছাসের কমতি নেই।বরিশালের অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ১৯৭১ সালে পাকিস্তানীদের জুলুম-অত্যাচার ও পরাধীনতার হাত থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। যেদিন বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সেদিন যেমন আনন্দ হয়েছিলো, আজ বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ-বিদেশের সকল ষড়যন্ত্রকে পিছু ফেলে পদ্মা সেতু নির্মানের মাধ্যমে সেই স্বাধীনতার মতো দেশের সর্বত্র আজ আনন্দ বয়ে যাচ্ছে। মুক্তিযোদ্ধারা আরও বলেন, বাংলাদেশের জন্য পদ্মা সেতু হচ্ছে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় একটি চ্যালেঞ্জিং প্রকল্প। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে তৈরী বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো হচ্ছে পদ্মা সেতু।
আওয়ামী লীগের দক্ষিণাঞ্চলের অভিভাবকখ্যাত, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সিনিয়র সদস্য মন্ত্রী আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। বিগত ১৪ বছরে বিভিন্নখাতে যেসব উন্নয়ন হয়েছে তা প্রধানমন্ত্রীর চিন্তা প্রসূত। ইতোমধ্যে যা ‘শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগ’ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। তিনি আরও বলেন, এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে, মান সম্মত প্রাথমিক শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নির্ভর উচ্চ শিক্ষা, কর্মবান্ধব কারিগরি শিক্ষা, শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, কমিউনিটি ক্লিনিক ও শিশু বিকাশ, নারীর ক্ষমতায়ন, আশ্রয়ন প্রকল্প, শিক্ষা সহায়তা, সুনীল অর্থনীতি, বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা, ডিজিটাল বাংলাদেশ, পরিবেশ সুরক্ষা ও বিনিয়োগ বিকাশ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা ও পরিবেশ সংরক্ষণ, আমার গ্রাম আমার শহর, আমার বাড়ী আমার খামার, দারিদ্র দূরীকরণ ও সামাজিক নিরাপত্তা, সমুদ্র বিজয়, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সফলভাবে উৎক্ষেপন। এসব উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে একটি নতুন মাইল ফলক রচিত হবে।বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত দক্ষতা ও সাহসিকতার সাথে বাংলাদেশের উন্নয়নে অনেকগুলো মেগা প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। যারমধ্যে পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প, মেট্টোরেল প্রকল্প, পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্প, দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্প, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, কয়লাভিত্তিক রামপাল থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্প, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ প্রকল্প ইত্যাদি।
পদ্মা সেতুর কারণে বাংলাদেশে বিনিয়োগে বিদেশীদের আস্থা বাড়বে জানিয়ে জাতীয় সংসদের সাবেক চীফ হুইফ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ বলেন, পদ্মা সেতুর কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার যাত্রীদের অপেক্ষার ভোগান্তির চির অবসান হবে। সহজতর হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা, হ্রাস পাবে নৌ দুর্ঘটনা। কৃষিপণ্য সহজলভ্য হবে। নতুন নতুন শিল্পায়নের মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের জনগণের জীবন যাত্রার মান অনেক উন্নত হবে।বাংলাদেশের অপশক্তিদের সমালোচনা করে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে দেশ-বিদেশে কঠোর ষড়যন্ত্র হয়েছিলো। যে কারণে বিশ্বব্যাংক ঋণ দিতে অস্বীকার করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে নিজস্ব অর্থায়নে এ সেতু নির্মাণ করে সারাবিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। সমগ্র বিশ্ববাসী আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করছেন।আওয়ামী সরকারের সময়ে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় দক্ষিণাঞ্চলবাসীর ভাগ্য উন্নয়নে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, একসময়ের অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চবাসী চিরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ঋণি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে এ দেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ দেশে পরিনত করতে তিনি (হাসানাত) দক্ষিণাঞ্চলবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান করেছেন।
আওয়ামী লীগের বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, পদ্মা সেতুর সবচেয়ে সুফলভোগী হবেন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। এ কারণে দলমত নির্বিশেষে দক্ষিনাঞ্চলের সর্বত্রই উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। লঞ্চ-বাসসহ বিভিন্নভাবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ইতিহাসের অংশ হতে চায় দক্ষিণাঞ্চলের লাখো মানুষ।শিচরের কাঠালবাড়ি মরহুম ইলিয়াস আলী চৌধুরী ফেরীঘাট প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ১০ লাখ মানুষের সমাগম হওয়ার প্রত্যাশা করেছেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাসিম।অপরদিকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ চমক দেয়ার কথা জানিয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ওই সমাবেশে বরিশাল বিভাগের অংশগ্রহণ বিশেষভাবে দেশবাসী প্রত্যক্ষ করবেন।