LastNews24
Online News Paper In Bangladesh

প্রচারণা নেই, ‘মাগনা’ ডেঙ্গু পরীক্ষাতেও সাড়া কম

0

বিশেষ প্রতিনিধি সিটি করপোরেশনের আওতাধীন ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, মহানগর শিশু হাসপাতাল ও নাজিরাবাজার মাতৃসদন হাসপাতালে এক মাস ধরে চলছে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা। তবে প্রচারণা না থাকায় এ সেবা নিতে আশানুরূপ সাড়া মিলছে না। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওই তিন হাসপাতালে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হচ্ছে– এ খবর অনেকের কাছেই অজানা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দৈনিক গড়ে ৩০ রোগীর বেশি নমুনা পরীক্ষা করতে হাসপাতালে যাচ্ছেন না। গত ১৮ আগস্ট বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়। অন্যদিকে রাজধানীর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগী বাড়ায় বিভিন্ন পরীক্ষা নিয়ে স্বজনদের রীতিমতো ঘাম ছুটছে।সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো ডেঙ্গু পরীক্ষাসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা থাকায় রোগীরা সেখানেই ছোটেন। সিটি করপোরেশনের চিকিৎসাকেন্দ্রে দরিদ্র শ্রেণির লোকজন বেশি যান। তাদের অনেকেই জ্বর হলে প্রথমে গুরুত্ব দিতে চান না। যখন জটিলতা দেখা দেয়, তখন সরাসরি মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি হন।গত রোববার ঢাকা মহানগর শিশু হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, রক্তের নমুনা দিয়ে ১৫ জনের মতো রোগী ও অভিভাবক ফলের অপেক্ষায় আছেন। লালবাগের বাসিন্দা আমেনা বেগম তাদেরই একজন। তাঁর ১২ মাসের মেয়ে সাদিয়ার চার দিন ধরে জ্বর। ওষুধেও জ্বর কমছিল না। আমেনা বলেন, মেয়েকে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলাম। পরে ডেঙ্গু পরীক্ষা দিয়েছে। নমুনা দিয়েছে, ২ ঘণ্টার মধ্যে ফল দেবে বলে অপেক্ষায় আছি।ভর্তি দিলে কী করবেন– জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই হাসপাতালে রোগী ভর্তির ব্যবস্থা নেই।   তাই পাশের কোনো সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।

মহানগর শিশু হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এই হাসপাতালে গত এক মাসে ৭৩৬ জনের ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার বাদ দিলে গড়ে দৈনিক ৩০ জনের ডেঙ্গু পরীক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক দিনে হাজারের বেশি ডেঙ্গু পরীক্ষা করানো হচ্ছে। আইইডিসিআরের উপদেষ্টা জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, তিন হাসপাতালে বিনামূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হচ্ছে, এটা ভালো উদ্যোগ। তবে সেবা নিতে আগ্রহী করে তুলতে নগরে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য সিটি করপোরেশনের উদ্যোগ নিতে হবে। পাশাপাশি বাড়াতে হবে প্রচারণা।মহানগর শিশু হাসপাতালের পরিচালক ডা. আহমেদ কুদরতে খোদা বলেন, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত এ সেবা দেওয়া হয়। শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছয় দিন এ সেবা চালু থাকে। এ পর্যন্ত যাদের নুমনা পরীক্ষা করানো হয়েছে, তাদের মধ্যে ২০ শতাংশ রোগীর ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। তবে রোগী অনেক কম আসে। রোগীদের অধিকাংশ কামরাঙ্গীরচর ও কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা। তারা জ্বরের বিষয়ে তেমন সচেতন নয়। ফলে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে যখন জটিল আকার ধারণ করে, তখন হাসপাতালে ভর্তি হয়। আমাদের হাসপাতালে রোগী ভর্তির সুবিধা নেই। তিনি বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।এ দিকে ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালে রোববার পর্যন্ত ৬৫০ জনের ডেঙ্গু পরীক্ষা করানো সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে ১৫০ জন ডেঙ্গু পজিটিভ এসেছে। দৈনিক ২৮ জনের পরীক্ষা করা হয়েছে। এই হাসপাতালে পাশেই স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল। সেই হাসপাতালে এখনও দৈনিক ৫০০ জনের বেশি ডেঙ্গুর নুমনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগর জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. আম্মাতে নূর ওয়াহিদা সুলতানা বলেন, মিটফোর্ড হাসপাতালের সঙ্গে আমাদের তুলনা করলে লাভ নেই। আমাদের নানা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ১০টা থেকে শুরু হয়ে বেলা ২টা পর্যন্ত এই পরীক্ষার সুযোগ থাকে। এ সময়ের পর অনেক রোগী আসে, তাদের আমরা পরীক্ষা করাতে পারি না।নাজিরাবাজার মাতৃসদন হাসপাতালেও একই অবস্থা। এখানে এ পর্যন্ত ৭২৩ জনের ডেঙ্গু পরীক্ষা করানো হয়েছে।তবে প্রচারণার অভাব– এমন কথা মানতে নারাজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির। তিনি বলেন, জ্বর নিয়ে যেসব রোগী আসছেন, তাদের সবাইকে ডেঙ্গু পরীক্ষা করানো হচ্ছে। কাউকে বাড়ি থেকে ডেকে এনে ডেঙ্গু পরীক্ষা করানো সম্ভব নয়। প্রচার-প্রচারণার কোনো অভাব নেই। আর এখন ঢাকাতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা কমে এসেছে। অন্য হাসপাতালগুলোতেও ডেঙ্গুর নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কম হচ্ছে।

About Author

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More