বিশেষ প্রতিবেদকঃ নড়াইলের খাশিয়াল গ্রামে অর্ধশতাধিক বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাড়িবাড়ি অগ্নিসংযোগ, হামলা, ভাঙচুর ও সন্ত্রাসী তাণ্ডবে পরিবারগুলোর দু’দিন আগের সাজানো-গোছান ঘর-সংসার, বসতভিটা বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে এ তাণ্ডব চালানো হয়। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে।সরেজমিনে রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) খাশিয়াল গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, খাশিয়াল উত্তরপাড়া পুরুষ শূন্য। তাণ্ডব আর ধ্বংসের চিহ্ন বিরাজ করছে চারপাশে। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। বসতঘর, দোকান, রান্নাঘর, গোয়ালঘর, কোন কিছুই বাদ যায়নি ধ্বংসযজ্ঞ থেকে। ঘরের টিনেরচালা, বেড়া, কুপিয়ে ছিন্নভিন্ন করা হয়েছে। খাট-পালং, শোকেজ, আলনা, ফ্রিজ, চেয়ার-টেবিল, বাক্স আলমারি ঘরের কোন জিনিষপত্র অক্ষত নেই।একদিন আগের সাজান-গোছান বাড়িঘর, সংসার আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বাড়িতে পুরুষ মানুষ নেই বললেই চলে, মহিলা ও শিশুদের চোখেমুখে আতঙ্ক বিবাজ করছে। পুলিশও স্থানীয়রা জানায়, এলাকায় অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানাধীন খাশিয়াল গ্রামের হানিফ শেখ, ওহাব শেখ পক্ষের সঙ্গে জাফর মোল্লা পক্ষের দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলছে। এই বিরোধের জেরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং জাফর মোল্লা তার প্রতিপক্ষ হানিফ শেখ পক্ষের হামলার শিকার হন। এর প্রতিশোধ নিতে জাফর মোলার সমর্থকরা ২৭ সেপ্টেম্বর হানিফ শেখের ছেলে মিলনকে কুপিয়ে আহত করে।অভিযোগ রয়েছে এর জেরেই শনিবার জাফর মোল্লার পক্ষের লোকজনের বাড়িঘরে হামলে পড়ে হানিফ, ওহাব শেখ পক্ষের লোকজন। ঘন্টাব্যাপি এ হামলায় হানিফ শেখদের পক্ষে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে আশপাশের কয়েক গ্রামের ৪/ ৫ শত লোক অংশ নেয়। এ সময় পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে ১৬টি ঘরবাড়ি স্থাপনা। বাড়ি বাড়ি চড়াও হয়ে যথা সর্বস্ব লুটে নেয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীরা এ বর্বরতার বিচার চেয়েছেন।হামলা অগ্নিসংযোগের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে অভিযুক্ত হানিফ শেখ পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে হানিফ শেখের ছেলে চুন্নু শেখ এ হামলা ভাঙচুরের ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে বলেন, জাফর মোল্লার লোকজনের হামলার শিকার আমার ভাই মিলনের চিকিৎসা নিয়ে আমরা ব্যস্ত ছিলাম। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মিলন বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ার কারণে আওয়ামীপন্থী জাফর মোল্লারা তার উপর হামলা চালিয়েছে। এর জেরে এলাকার ছাত্রজনতা তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে থাকতে পারে।কালিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ কিশোর রায় বলেন, খাশিয়াল গ্রামের বিবাদমান দুপক্ষের সংঘাত সংঘর্ষের ঘটনায় ইতিপূর্বে ৩টি মামলা দায়ের হয়েছে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হামলা পাল্টা হামলার জেরে জাফর মোল্লার পক্ষের বাড়িঘরে অনুমানিক ৪/৫ শত লোকেরা এ হামলা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকায় স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। এ সংক্রান্তে আইনগত আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
Next Post