LastNews24
Online News Paper In Bangladesh

ধর্ষণ শেষে হত্যার উদ্দেশ্যে সিলিং ফ্যানে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখে

0

 টাঙ্গাইল প্রতিনিধি টাঙ্গাইলের বাসাইলে তৃষা মণি (৯) নামের এক শিশু শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সোমবার (৬ জুন) দুপুরে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।গ্রেপ্তারকৃতরা হলো উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের স্বপন মণ্ডলের ছেলে গোবিন্দ মণ্ডল, আনন্দ মণ্ডলের ছেলে চঞ্চল চন্দ্র মণ্ডল ও লালিত সরকারের ছেলে বিজয় সরকার। এর আগে রবিবার (৫ জুন) দিবাগত রাতে বাসাইল ও সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

মৃত তৃষা মণি উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের আবু ভূঁইয়ার মেয়ে। তৃষা বাসাইল পৌর এলাকার শহীদ ক্যাডেট স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।জানা যায়, গত ২৬ মে বিকেলে তৃষার মা সম্পা বেগম তাঁর ছেলে শুভকে স্কুল থেকে আনতে বের হন। এর কিছুক্ষণ পর তিনি বাড়িতে ফিরে দেখেন তৃষা সিলিংফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখান থেকে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করেন। পরে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৮ মে বিকেলে তার মৃত্যু হয়। ওই সময় অভিযোগ ওঠে তৃষাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে হত্যার উদ্দেশ্যে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়।এ ঘটনায় প্রাথমিক পর্যায়ে বাসাইল থানার পুলিশ একটি অপমৃত্যু মামলা নেয়। এরপর ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার আলামত পাওয়া যায়। গত ৪ জুন তৃষার বাবা আবু ভূঁইয়া বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩)-এর ৯(৩) ধারায় মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি স্ব-উদ্যোগে পিবিআই তদন্তের দায়িত্ব নেয়।

পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার সিরাজ আমিন জানান, তৃষা মণি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুজোয় নাচ-গান করত। তার নাচ দেখে বাড়ির আশপাশের গোবিন্দ মণ্ডল, চঞ্চল চন্দ্র মণ্ডল ও বিজয় সরকার আকৃষ্ট হয়। তাদের মনে বিকৃতি দানা বাঁধে। তারা প্রায়ই তৃষাকে উত্ত্যক্ত করত। প্রায় দুই মাস আগে তৃষা তার মা সম্পা বেগমের কাছে বিষয়টি খুলে বলে। কিন্তু আসামিরা বখাটে ও প্রভাবশালী হওয়ায় সম্পা তাদের কিছু বলতে সাহস পাননি। আসামিরা তৃষার মায়ের অবস্থান অনুসরণ করত। আসামিরা জানতে পারে তৃষাকে বাড়িতে একা রেখে তার মা ওই দিন ছেলে শুভর স্কুল ছুটির পর তাকে এগিয়ে আনতে যান। এই সুযোগে অভিযুক্ত তিনজন ঘরে গিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে হত্যার উদ্দেশ্যে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে শিশুটির মৃত্যু হয়।তিনি আরো জানান, মৃত্যুর পর প্রাথমিকভাবে বাসাইল থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়। পরে ৪ জুন ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ধর্ষণের পর হত্যার আলামত পাওয়া যায়। মামলাটি পিবিআই স্ব-উদ্যোগে তদন্তের জন্য গ্রহণ করে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক খন্দকার আশরাফুল কবির তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের গ্রেপ্তার করেন। আসামিরা নিজের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেবে বলে জানায়। জবানবন্দি না দিলে মামলা তদন্তের স্বার্থে আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।মৃত তৃষার মা সম্পা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়েকে যারা অমানবিকভাবে হত্যা করেছে, আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হিসেবে ফাঁসি দাবি করছি। যাতে পরবর্তীতে আর কোনো মায়ের কোল এভাবে খালি না হয়।

About Author

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More