ষ্টাফ রিপোর্টার/- ‘আইনের শাসন ও সুশাসনের অভাবে দেশে খুন, ধর্ষণ এবং অনাচার-অবিচার বেড়ে গেছে। আইনের ফাঁক দিয়ে প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে যায়, আর সেকারণেই অপরাধ প্রবণতা বেড়ে যায়।’
সোমবার (২ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের মিলনায়তনে নবগঠিত সাংস্কৃতিক পার্টির পরিচিতি অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘দেশের খুন ও ধর্ষণের ঘটনা আন্তর্জাতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আইনের শাসনে কিছুটা ঘাটতি আছে বলেই মানুষ নিজ হাতে আইন তুলে নিচ্ছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ধর্ষণের প্রতিবাদ জানাতে দেশের মানুষ রাস্তায় নেমেছে। এর চেয়ে লজ্জার কিছু নেই।’
তিনি বলেন, ‘লালমনিরহাটে বুড়িমারি এলাকায় এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে, আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদে আশ্রয় চেয়েও বাঁচতে পারেনি সে।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘যদি ছেলেটি অপরাধী হয় সেজন্য দেশে আইন আছে- তাকে আইনের মুখোমুখি করা যেত। অপরাধ প্রমাণ হলে প্রচলিত আইনেই তাকে শাস্তি দেয়া যেত।’
এই নির্মম ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান তিনি।
জি এম কাদের বলেন, ‘দেশে মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার অভাব স্পষ্ট। রাজপথে দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু যেন নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে সরকারকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সর্বস্তরে জবাবদিহিতার অভাবে সুশাসনে ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। আমরা দেশ থেকে খুন, ধর্ষণ, অবিচার-অনাচারের অবসান চাই। বিশ্বের সকল বৈপ্লবিক পরিবর্তন ও সামাজিক বিবর্তনে সাংস্কৃতিক কর্মীরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।’
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘একটি দীর্ঘ বক্তৃতা মানুষকে যতটা উদ্বুদ্ধ করতে পারে, তার চেয়ে একটি গান বা একটি কবিতা স্বল্প সময়ের মধ্যেই মানুষকে বেশি উদ্বুদ্ধ করতে পারে এবং তা হয় অনেক বেশি স্থায়ী।’
রাজনৈতিক আদর্শকে এগিয়ে নিতে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের বিকল্প হয় না। তাই পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়তে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টিকে আরও শক্তিশালী করতে নির্দেশ দেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।
জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টির আহ্বায়ক শেরিফা কাদেরের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আলাউদ্দিন আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান অ্যাড সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফয়সাল চিসতী, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, অ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, নাজমা আকতার, আলমগীর শিকদার লোটন, ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর।
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ শুধু উন্নয়ন চায় না, মানুষ উন্নয়নের সঙ্গে সুশাসন চায়। দেশের ইতিহাসে একমাত্র পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ উন্নয়নের সঙ্গে সুশাসন দিতে পেরেছেন। তাই দেশের উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করতে আগামী নির্বাচনে পল্লীবন্ধুর জাতীয় পার্টি ভোট বিপ্লবে বিজয়ী হবে।’
জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘ফরাসী বিপ্লব, চাইনিজ বিপ্লব, রুশ বিপ্লব, বৃটিশবিরোধী আন্দোলন এবং মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে সাংস্কৃতিক কর্মীরা ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছেন। একই ধারাবাহিকতায় পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আদর্শ বাস্তবায়নে জাতীয় সাংস্কৃতিক পার্টিকে আরও শক্তিশালীভাবে কাজ করতে হবে।’