বিশেষ প্রতিনিধি বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি সেখানে দলীয় সরকারের অধীনে কখনোই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার খুব বেশি প্রয়োজন।আজ বুধবার (১৫ জুন) সকালে ঠাকুরগাঁওয়ের কালীবাড়ির বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফসহ জেলা বিএনপির অন্যান্য নেতা উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে অনেকের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছিল, নতুন নির্বাচন কমিশন চেষ্টা করবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায় কি না। সরকারও হয়তো নির্বাচন কমিশনের কিছুটা গ্রহণযোগ্যতা সৃষ্টি করার জন্য চেষ্টা করবে এবং নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার বিষয়েও দূরে থাকার চেষ্টা করবে সরকার। কিন্তু তার কিছুই হয়নি। সরকারের কারণেই সরকারি দলের এমপি কুমিল্লায় অবস্থান করছেন। নির্বাচন কমিশন তাকে চিঠি দেওয়ার পরও সেখান থেকে বের হন নাই। এ বিষয়ে গোটা নির্বাচন কমিশন তাদের অসহায়ত্ত প্রকাশ করেছে। সুতরাং এই ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয়ে গেছে যে শুধু কুমিল্লা সিটি নির্বাচন নয়, সারা বাংলাদেশের নির্বাচনব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে এই সরকার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে ধ্বংস করে ফেলেছে।তিনি আরো বলেন, শুধু বিএনপি নয়, সব বিরোধী দল বলছে, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার যদি না থাকে তাহলে নির্বাচন কমিশন যে-ই থাকুক না কেন, তাকে দিয়ে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। এ বিষয়ে সিরিজ বৈঠকে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনসহ সবাই একই কথা বলেছেন।বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না জানিয়ে দিয়ে মির্জা ফখরুল আরো বলেন, বাংলাদেশের মানুষের স্থির বিশ্বাস যে নির্বাচনব্যবস্থাকে এই সরকার এমন জায়গায় নিয়ে গেছে, যেখানে মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারে না। আর ভোট দিতে পারলেও সেই ভোটকে তারা নিজেদের মতো করে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। বিএনপি এই ব্যবস্থাকে কখনোই গ্রহণ করবে না এবং নির্বাচনে যাবে না। এ বিষয়ে বিএনপি বরাবর প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে, পরবর্তীকালে যথার্থ সময় সাপেক্ষে বড় আন্দোলন করবে এবং এ বিষয়ে সব বড় রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ করা হচ্ছে। সবাই বিএনপির সঙ্গে একমত, এই সরকারের অধীনে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।তিনি আরো বলেন, অর্থমন্ত্রীর কথা আইন নয়, পরিষ্কার করে আইনে বলা আছে- নির্বাচনকালীন কোনো সংসদ সদস্য তার এলাকায় থাকতে পারবেন না। কিন্তু অর্থমন্ত্রী অনেক কিছুই করেছেন, যার সঙ্গে আইন, সংবিধান, নীতি-নৈতিকতার কোনো সংযোগ নেই। তিনি বিদেশে টাকা পাচার করছেন এবং সেই টাকা বৈধ করার জন্য বিভিন্ন রকম আইন তৈরি করছেন। এই দেশটা আর কোনো সভ্য গণতান্ত্রিক দেশ না, এটা এখন বর্বর অসভ্য রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। সম্পূর্ণভাবে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়ে গিয়েছে।