অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, একটি টেকসই ও প্রগতিশীল দেশ গঠনে তরুণদের যুক্তি, উদ্ভাবনী চিন্তা ও সুশীল সমাজের দিকনির্দেশনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা যদি সত্যিই দেশকে নতুন পথে এগিয়ে নিতে চাই, তবে এই দুই শক্তির সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।
বিডব্লিউজিইডির নির্বাহী কমিটির সদস্য মনোয়ার মোস্তফার সভাপতিত্বে ও ক্লিনের প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নুর আহমেদ, ডিরেক্ট রেনেভেবল এনার্জির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সিটি ব্যাংকের চিফ ইকোনমিস্ট ও কান্ট্রি বিজিনেস ম্যানেজার আশানুর রহমান খোকন, এথিক্যাল ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল (ইটিআই) বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার আবিল বিন আমিন প্রমুখ।
উদ্বোধনী বক্তব্যে তরুণদের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সম্পৃক্ততা করার প্রতি গুরুত্বারোপ করে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘মানুষ যাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনে, তাদের অধিকাংশই প্রশাসনকেন্দ্রিক সিদ্ধান্তের ধারায় পরিচালিত হন। তারা সরাসরি সুশীল সমাজ বা তারুণ্যের প্রতিনিধি নন।তাই দেশকে নতুন পথে এগিয়ে নিতে আমরা মন্ত্রণালয়ের কমিটিগুলোতে তরুণ সমাজ ও নাগরিক প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশনা দিয়েছি।’
উপদেষ্টা বলেন, মাত্র ৭ মাসে বিদ্যুৎ খাতে বৈদেশিক ঋণ ৩.২ বিলিয়ন ডলার থেকে ৮০০ মিলিয়ন ডলারে নেমে আসা একটি স্পষ্ট বার্তা যে, পরিবর্তন সম্ভব, যদি রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকে।
ভিন্ন ধারার উন্নয়ন, ভিন্ন জীবনধারা এবং ভিন্ন দর্শন প্রচারের জন্য তরুণদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের রেখে যাওয়া পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনাদের নেতৃত্ব দিতে হবে।সঠিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে সবুজ ও টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হবে।’
ক্লিনের প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী বলেন, ‘বাংলাদেশের জ্বালানি ভবিষ্যৎ কেবল বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রশ্ন নয়, এটি ন্যায্যতা, পরিবেশ এবং প্রজন্মান্তরের নিরাপত্তার প্রশ্ন। এখনই সময়, বিদেশনির্ভর জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে সরে এসে স্থানীয় ও টেকসই উৎসকে কেন্দ্র করে ন্যায্য জ্বালানি রূপান্তরের পথে এগিয়ে যাওয়ার।’
তিনি আরো বলেন, এই অলিম্পিয়াড শুধুমাত্র একটি প্রতিযোগিতা নয়; এটি একটি জাতীয় মঞ্চ যেখানে তরুণরা যুক্তি, বিশ্লেষণ এবং নেতৃত্বের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় নিজেদের প্রতিশ্রুতি প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছে।অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সবুজ জ্বালানি অলিম্পিয়াড-২০২৫ একটি দেশব্যাপী শিক্ষাবিষয়ক প্রতিযোগিতা, যা পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির গুরুত্ব বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি ও নেতৃত্ব গড়ার লক্ষ্যে আয়োজিত হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় ১৫০টি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪ হাজার ৯০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করছে। প্রতিযোগিতাটি ৬টি ধাপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে অংশগ্রহণকারীদের জ্ঞান, বিশ্লেষণ এবং যুক্তি উপস্থাপনের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হয়। এই কর্মসূচি তরুণদের পরিবেশ সংরক্ষণ এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ে নেতৃত্ব গড়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
- Advertisement -