মোজেইক ব্র্যান্ডসের এই সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশের ২৩টি পোশাক কারখানা বিপদে পড়েছে। সব ফ্যাক্টরি মিলিয়ে মোজেইক ব্র্যান্ডসের দেনার পরিমাণ ৩০ মিলিয়ন ডলার বা তিন কোটি ডলার।অস্ট্রেলিয়ান ব্র্যান্ডটির দাবি, তারা দেউলিয়া হওয়ার পথে রয়েছে।
বাংলাদেশের বাইরে চীন ও ভারতের অনেক পোশাক কারখানাও মোজেইক ব্র্যান্ডসের কাছে অর্থ পায়। মোট দেনার পরিমাণ আসলে কত তা জানতে পূর্ণাঙ্গ অডিট (হিসাব নিরীক্ষা) সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছে মোজেইক ব্র্যান্ডসের কাছে পোশাক সরবরাহ করা কম্পানিগুলো।
আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পোশাক সরবরাহকারী কম্পানিগুলোর সঙ্গে মোজেইকের বৈঠক করার কথা। সেখানে সম্পদ বিক্রি এবং ব্যবসা পুনর্গঠনের মাধ্যমে অর্থ পরিশোধের ব্যাপারে পরিকল্পনা উপস্থাপন করবে তারা। তবে বিদেশি পাওনাদারদের অর্থ পরিশোধের প্রক্রিয়া কী হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা এখনো কাটেনি।
পোশাক সরবরাহকারী কম্পানিগুলোর দাবি, আক্রমণাত্মক ব্যাবসায়িক কৌশলই মোজেইকের ভরাডুবির কারণ। তৈরি পোশাক কারখানা হাইড্রোঅক্সাইড নিটওয়্যারের মালিক ওমর চৌধুরী বলেন, মোজেইকের চাহিদা অনুযায়ী অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ দেন তিনি। ১২০ দিন পেরিয়ে গেলেও অর্থ পরিশোধ করেনি অস্ট্রেলিয়ান কম্পানিটি। এ ধরনের কর্মকাণ্ড প্রতারণার মধ্যে পড়ে বলে মন্তব্য করেন ওমর চৌধুরী।
সুলতানা সোয়েটার্সের ম্যানেজার সারওয়ার হোসেইন বলেন, ‘ফ্যাক্টরি চালাতে গেলে মালিকপক্ষকে শুধু বেতন নয়, কাঁচামাল, বিদ্যুৎ, পরিবহন ইত্যাদি নিয়েও ভাবতে হয়। অর্থাভাবে থাকা কারখানাগুলোকে ব্যাংকও আর ঋণ দিতে চাচ্ছে না। মোজাইকের কাছে সুলতানা সোয়েটার্সের পাওনা রয়েছে ১০ লাখ ডলার। কারখানা এই অর্থ না পাওয়ায় তার বেতনও আটকে গেছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, করোনা মহামারি ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে দেশের পোশাক খাত অনেক আগে থেকেই ভুগছে। তার ওপর পাওনা অর্থ না দিয়ে মোজেইক খুব বাজে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। তাদের এই কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাসে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাদের বক্তব্য হলো, আইনি সহায়তা নিয়ে এই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে। অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, এমন দায়সারা জবাব দিয়ে অস্ট্রেলিয়া আসলে নিজেদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।