নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে মাত্র আড়াই কিলোমিটার কাঁচা সড়কের জন্য এগারো গ্রামের মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এলাকার হাজারো কৃষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সব পেশার মানুষ এই সড়ক দিয়ে চলাচল করে। বর্ষা মৌসুমে মানুষের ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে সড়কটি পাকাকরণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের সুতিয়ারপাড় বাজার থেকে পশ্চিম দিকে পলাশিয়া গ্রাম হয়ে সুতিয়ার খাল কোল ঘেঁষে রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের ফুলপুর বান্দের বাজার পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কটি। সড়কের মাঝখানে পলাশিয়া গ্রামের আসমত আলীর বাড়ী থেকে ফুলপুর গ্রামের হবির বাড়ী পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়কটি সম্পূর্ণ কাঁচা হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই মানুষের চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। বৃষ্টির পানিতে সড়কের বিভিন্ন যায়গায় খানাখন্দ সৃষ্টি হওয়ায় মোটর সাইকেল, রিকশা ও ভানগাড়ীসহ ছোট ছোট যানবাহন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। মাঝে মাঝে রিকসা চালক এ সড়ক দিয়ে চলাচলের সময় চাকা পিছলে খালে পড়ে গিয়ে আহত হন। ওই সময় রিকশাটিও দুমড়ে মুচড়ে যায়। তাই সচরাচর রিকশাচালকরা এ রাস্তায় আসতে চান না। এই সড়ক দিয়ে কাকরকান্দি ইউনিয়নের সুতিয়ার পাড় বাজারে বর্ণমালা একাডেমি ও বিন্নিবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের ফুলপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ঘাকপাড়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করেন। কিন্তু বর্ষাকাল এলেই এই এলাকার শিক্ষার্থীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি কমে যায়। এ ছাড়াও পলাশিয়া, হাতিবান্দা, কাওলারা, বিন্নিবাড়ী ও পাশের রামচন্দ্রকুড়া ইউনিনের ফুলপুর, কেরেঙ্গাপাড়া, গেদালুপাড়া ও ঘাকপাড়া এবং নালিতাবাড়ী ইউনিয়নের সুতিয়ারপাড়, চান্দের নন্নী ও চিনামারা এই ১১ গ্রামের প্রায় দশ হাজার লোকজন যাতায়াত করে থাকেন।পলাশিয়া গ্রামের ঝালমুড়ি বিক্রেতা মো.আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমি ঝলিমুড়ি গাড়িতে নিয়া প্রতিদিন সুতিয়ারপাড় বাজারে বিক্রি করি। তাই দিয়া আমার সংসার চলে। কিন্ত বৃষ্টি অইলেই গাড়ি নিয়া চলতে এই রাস্তাদিয়া খুব কষ্ট হয়। তাই বাড়ি থাইকা কয়েকজন ডাইকা আনি ওরা গাড়ি ঠেইলা পাকা রাস্তা পর্যন্ত দিয়া আহে।’এ ছাড়াও সাইজদ্দিন, আব্দুল জলিল ও মোফাজ্জল হোসেনসহ কয়েকজন জানান, বর্ষাকালে একটু বৃষ্টি অইলেই রাস্তায় বড় বড় গর্ত হয়। দিনের বেলায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কিছু যানবাহন চলাচল করলেও রাতে কোনো যানবাহন চলাচল করে না। জরুরি মুহূর্তে কোনো রোগী অথবা গর্ভবতী মহিলাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে পড়তে হয় কষ্টে। বর্ণমালা একাডেমির অধ্যক্ষ আবু ইলিয়াস সাদ্দাম বলেন, বর্ষাকালে এ রাস্তায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ায় ওই এলাকার ২৫-৩০ জন শিক্ষার্থীরা অনুপস্থিত থাকেন। আর যারা আসেন প্রতিষ্ঠানে সঠিক সময়ে উপস্থিত হতে পারেনা।নালিতাবাড়ী উপজেলা এলজিইডি’র সহকারী প্রকৌশলী মো. কামাল উদ্দিন খান বলেন, রাস্তাটি সরেজমিন পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।