শনিবার (১৭ মে) রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) নতুন ভবন উদ্বোধন করেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. এম আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক প্রমুখ ।
প্রধান উপদেষ্টা মাইক্রোক্রেডিট কার্যক্রমকে এনজিও-ভিত্তিক কাঠামো থেকে বের করে আনতে একটি স্বতন্ত্র ‘মাইক্রোক্রেডিট ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন, যাতে এটি একটি আনুষ্ঠানিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বর্তমানে মাইক্রোক্রেডিটকে একটি এনজিও হিসেবে দেখা হয়, তবে এটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংকে পরিণত করতে হলে এনজিও কাঠামো থেকে ব্যাংক ব্যবস্থায় রূপান্তর প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘স্পষ্টতই এটিকে একটি ব্যাংক হতে হবে এবং এর জন্য একটি আলাদা ব্যাংকিং আইন দরকার।’
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে মাইক্রোক্রেডিট প্রতিষ্ঠান শুধু তাদের সদস্যদের কাছ থেকেই আমানত গ্রহণ করতে পারে, যা পরিবর্তন করে একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংকের রূপ দিতে হবে।
‘এটা এখন আলোচনার উপযুক্ত সময়,’ বলেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, ‘যেসব ব্যাংককে আমরা প্রকৃত ব্যাংক মনে করতাম, সেগুলো আজ জনগণের টাকা লুট করে ধ্বংস হয়ে গেছে, কিন্তু মাইক্রোক্রেডিট একটি স্বচ্ছ ভিত্তিতে এখনও টিকে আছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি মানুষ ভুয়া ব্যাংক নিয়ে ব্যস্ত, অথচ প্রকৃত ব্যাংকের দিকে মনোযোগ দেওয়া হয়নি।’
১৯৭৬ সালে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মাইক্রোক্রেডিট ব্যবস্থাকে কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। বিশ্বাস ও সৃজনশীলতার ওপর ভিত্তি করে একটি বিকল্প ব্যাংকিং ব্যবস্থা গড়ে তুলে অধ্যাপক ইউনূস ঐতিহ্যগত ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নতুন প্রাণ সঞ্চার করেন।
অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মন্সুর, এমআরএর নির্বাহী উপ-চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এনজিও-ভিত্তিক মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলোর (এনজিও-এমএফআই) কার্যক্রমকে একটি নিয়ন্ত্রিত কাঠামোর আওতায় আনতে সরকার ২০০৬ সালের ১৩ জুলাই ‘মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি অ্যাক্ট, ২০০৬’ (আইন নম্বর ৩২, ২০০৬) প্রণয়ন করে, যা ২৭ আগস্ট ২০০৬ থেকে কার্যকর হয়।
- Advertisement -