আন্তর্জাতিক ডেস্ক এক মাসের বেশি ব্যবধানে আবার রাশিয়ার হামলার শিকার হলো ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ। এবার শহরের রেল কাঠামোতে আঘাত হেনেছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র। রুশ সেনারা পূর্ব ইউক্রেনের সেভেরদনেত্স্ক শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে সাধ্যমতো চেষ্টা করলেও গত দুই দিনে তারা কিছুটা পিছু হটেছে বলে জানা গেছে।এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, পশ্চিম থেকে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হলে মস্কোও নতুন লক্ষ্যে আঘাত হানবে।
২৮ এপ্রিলের পর এবারই প্রথম আবার কোনো আঘাত হলো ইউক্রেনের রাজধানীতে। ঘটনাটি সম্পর্কে নিশ্চিত করা হয়েছে ইউক্রেনের পক্ষ থেকেও। ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের দপ্তরের উপদেষ্টা সেরহি লেশচেঙ্কো বলেন, ‘হামলায় ইউক্রেনের রেলওয়ে কাঠামোকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।রাশিয়ার দাবি, তারা কিয়েভ শহরের বাইরে পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোর সরবরাহ করা টি-৭২ ট্যাংক এবং অন্যান্য সাজোয়াঁ যান ধ্বংস করেছে।জানা গেছে, যুদ্ধের ১০১তম দিনে পূর্ব ইউক্রেনের শহর সেভেরদনেত্স্কর নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে সর্বশক্তি নিয়োগ করছে রাশিয়া। ওই অঞ্চলের আঞ্চলিক গভর্নর সেরহি হাইদাই বলেন, ‘রাশিয়ার সামরিক বাহিনী তাদের সব শক্তি এদিকে পাঠাচ্ছে। ’ শহরটিতে কিছুদিন ধরে তীব্র লড়াই হচ্ছে। সেভেরদনেত্স্ক শহরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে গোটা লুহানস্কে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে রুশ সেনারা।প্রসঙ্গত, ২০১৪ সাল থেকেই লুহানস্কের কিছু অংশ রুশ সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দখলে রয়েছে।
তবে সেভেরদনেত্স্কের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার বেলায় সুবিধা করে উঠতে পারছে না রুশ সেনারা। অন্তত তাই বলছেন লুহানস্কের গভর্নর হাইদাই। তার দেওয়া তথ্যানুসারে, রুশ সেনাদের দখলে চলে গিয়েছিল সেভেরদনেত্স্কর এমন কিছু অংশ ইউক্রেনের বাহিনী আবার নিজেদের দখলে নিয়েছে। হাইদাই বলেন, ‘শহরের ৭০ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ ছিল রাশিয়ার হাতে, কিন্তু গত দুই দিনে তারা পিছু হটেছে।রাশিয়ার বাহিনীর অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলেও দাবি করেছেন গভর্নর। সেভেরদনেত্স্কে রাশিয়া যেভাবে গোলাবর্ষণ করেছে, তাতে সেখানকার যুদ্ধকে মারিওপোলের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে।দনবাসের অন্যান্য অঞ্চলেও আক্রমণ চলছে। দনেত্স্ক অঞ্চলে ইউক্রেন ও রাশিয়ার বাহিনীর লড়াইয়ের জেরে কাঠের তৈরি এক সুপরিচিত গির্জায় আগুন ধরে যায়। ইউক্রেনীয় অর্থোডক্স গির্জা থেকে জানানো হয়, আগুন ওই উপাসনালয়ের মূল কক্ষকে সম্পূর্ণ ছেয়ে ফেলেছিল। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি ওই আগুনের জন্য রাশিয়ার বাহিনীকে দায়ী করেছেন।দনবাসে মূল মনোযোগ থাকলেও ইউক্রেনের অন্যান্য স্থানে গোলাবর্ষণ থামায়নি রাশিয়া। এর অন্যতম উদাহরণ মাইকোলাইভ। যুদ্ধের প্রথম ভাগেই যে অঞ্চলগুলোতে আক্রমণ চালানো হয়েছিল, দক্ষিণের ওই কৃষ্ণ সাগর বন্দর শহরটি তার অন্যতম। সে সময় শহরের সীমানা থেকে পিছিয়ে আসতে হয়েছিল রুশ সেনাদের। কিন্তু এখনো প্রতিদিন সেখানে গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে তারা। রাশিয়া যদি দনবাস দখলের লক্ষ্য পূরণে সফল হয়, তাহলে নিজেদের মনোযোগ আবারও তারা দক্ষিণের দিকে ঘুরিয়ে দিতে পারে।