‘আবারও বলছি, বিএনপিকে থামানোর চেষ্টা করবেন না’ : আমীর খসরু

0
রাজনীতি প্রতিবেদকঃ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আবারও বলছি, বিএনপিকে থামানোর চেষ্টা করবেন না। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকার ও তাদের সংসদ দেখতে চায়। এটা বাধাগ্রস্ত করার কোনো সুযোগ নেই। বিএনপি এর জন্য বিগত দিনে অনেক ত্যাগ শিকার করেছে, প্রয়োজনে আবার ত্যাগ শিকার করতে রাজি।

- Advertisement -

শনিবার (১৬ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহরের বিপ্লব উদ্যানে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় যুবদলের দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে সমাবেশ ও কালুরঘাট অভিমুখী যুব পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আমীর খসরু বলেন, ‘বিগত দিনগুলোতে আমরা রাজপথে রক্ত দিয়েছি, জেলে গিয়েছি, অনেক নেতাকর্মী হারিয়েছি, অনেক কিছুই হারিয়েছি জীবনে। কিন্তু একটা জায়গায় ভালো কাজ করেছি, বিএনপির নেতাকর্মীরা জ্বলে-পুড়ে খাঁটি সোনায় পরিণত হয়েছে। এ জন্য বিএনপিকে ভাঙতে পারেনি।বিএনপি আজ অনেক শক্তিশালী। বিএনপিকে যারা যখনই থামাতে গেছে, তখনই তারা ধ্বংস হয়েছে। বিএনপি কোথায়, আর যারা বিএনপিকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল তারা আজ কোথায়?’

তিনি বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্র কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। কেউ বলে দিতে পারে না, আগামী দিনের বাংলাদেশের রাজনীতি কী হবে।এ সিদ্ধান্ত দেবে বাংলাদেশের জনগণ। এ সিদ্ধান্ত অন্য কারো দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘জনগণের সিদ্ধান্ত অনেকে অনেকবার দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবও চেষ্টা করেছিলেন, তিনি কি সফল হয়েছেন? এরপর এরশাদ চেষ্টা করেছিল, শেখ হাসিনা চেয়েছিল, তারা কি পেরেছে? তাই সেদিকে না গিয়ে বাংলাদেশের জনগণের সিদ্ধান্ত তাদের দিতে দেন।’

দেশের স্বাধীনতায় অনেকের অবদান রয়েছে জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমানের অবদান আছে এবং অনেকের অবদান আছে।জাতির জনক বলতে যা বোঝায়, এগুলো কোনো এক ব্যক্তির কথা নয়, এগুলোর পেছনে অনেক নেতাদের ত্যাগ শিকার করতে হয়েছে, জীবনযুদ্ধে নামতে হয়েছে, অনেকে সম্মুখ যুদ্ধে যুদ্ধ করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছেন। সবাইকে স্বীকৃতি দিতে হবে। অনেকের অবদান আছে, যাদের অবদান আছে আজ পর্যন্ত সবাইকে স্বীকৃতি দিয়ে স্মরণ করতে হবে। শুধু একজন ব্যক্তিকে নয়।

বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘ওই যে একজন ব্যক্তিকে (শেখ মুজিবুর রহমান) সিম্বল হিসেবে ব্যবহার করে বাংলাদেশে যে গুম, খুন, হত্যা, মামলা, নিপীড়ন, নির্যাতন, লুটপাট, এ দেশের মানুষের মানবাধিকার, গণতন্ত্রের অধিকার, আইনের শাসন কেড়ে নেওয়া, বাংলাদেশকে একটি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত করা করেছে; সেই ব্যক্তির নাম দিয়ে এবং সেই ব্যক্তির মূর্তি স্থাপন করেছে বাংলাদেশে এই খারাপ কাজগুলো করেছে তারা। তাদের সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যক্তিও হঠাৎ করে চলে যায়। একটা সিম্বল ব্যবহার করে খারাপের পর খারাপ কাজ করতে থাকেন, এরপর আপনার যখন পতন হয়, তখন ওই সিম্বলেরও পতন হয়। এটা দুর্ভাগ্য। তারা যদি সবাইকে স্বীকৃতি দিত, দেশের গণতন্ত্র অব্যাহত রাখত, দেশের মানুষের অধিকারগুলো দিয়ে দিত, ভোটাধিকার দিত, জনগণের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার থাকত, যারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকত, তাহলে এই দুর্ভাগ্য হতো না।’

আমীর খসরু বলেন, ‘স্বাধীনতা বা কোনো ব্যক্তিকে মূলধন বানিয়ে কোনো খারাপ কাজ করে টিকে থাকতে পারে না। এটা বাংলাদেশে প্রমাণ হয়েছে। সেই শহীদ জিয়াউর রহমান, যিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল করেছিলেন, এটার মূল ভিত্তি ছিল বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, অর্থনৈতিক মুক্তি, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। এখানে জনগণ মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। এ জন্য শহীদ জিয়াউর রহমানের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল আজকেও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। এ দলকে ধ্বংস করার জন্য এমন কোনো কিছুই বাদ রাখেনি। আমাদের নেতাকর্মীরা চাকরি হারিয়েছে, বাড়িতে থাকতে পারেনি, পালিয়ে থাকতে হয়েছে। আমাদের নেতাকর্মীরা বছরের পর বছর মিথ্যা মামলায় জেল খেটেছে।’

কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্নার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়নের পরিচালনায় কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান।

সমাবেশের আগে বিপ্লব উদ্যানে রংতুলিতে আঁকা স্বাধীনতার ঘোষণাচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।

- Advertisement -

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.