বিশেষ প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, আগামী সাধারণ নির্বাচনে জনগণ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে। নির্বাচন ঘনিয়ে এসেছে। হয়তো দু-এক দিনের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখ ও সময় (তপশিল) ঘোষণা করবে। জনগণের ভোটের অধিকার আমরাই নিশ্চিত করেছি। দেশবাসীর প্রতি তিনি বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী তাঁর নামে নামকরণ করা ‘শেখ হাসিনা সরণি’ (পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে, কুড়িল থেকে কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত) এবং চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ ১৫৭টি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১০ হাজার ৪১টি স্থাপনা ও ঘরের উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে ভাষণে এসব কথা বলেন। তিনি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এসব প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ৬৪টি জেলার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ দেশের ১০১টি প্রান্ত ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিল। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে– সারাদেশে ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অধীনে ১ লাখ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪ হাজার ৬৪৪টি বিভিন্ন উন্নয়ন অবকাঠামো এবং ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ৫ হাজার ৩৯৭টি গৃহনির্মাণ। খবর বাসসের।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, অনেকে নির্বাচনে আসতে চায় না। কারণ, যারা ৩০টি সিট পেয়েছিল (২০০৮ সালে)। স্বাভাবিকভাবে তাদের নির্বাচনে আসার কোনো আকাঙ্ক্ষাই থাকবে না। নির্বাচন বানচাল করে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে আবার দেশের মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে ফেলাই তাদের চেষ্টা। দেশের মানুষ একটু শান্তিতে ছিল, স্বস্তিতে ছিল, উন্নয়ন দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল; ঠিক সে সময় এই অবরোধ আর অগ্নিসন্ত্রাস ও জ্বালাও-পোড়াও। গাড়িতে আগুন, বাসে আগুন দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা ব্যাহত করা হচ্ছে, স্কুল-কলেজের ছেলেমেয়েরা ঠিকভাবে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারছে না। তাদের লেখাপড়া নষ্ট হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াতের শুভবুদ্ধির উদয় হবে– এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমি এটুকু বলব যে, ওদের সুমতি হোক। এই ধ্বংসযজ্ঞ তারা বন্ধ করুক। অগ্নিসন্ত্রাস বন্ধ করুক। অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, দেশবাসীকেও বলব, এই অগ্নিসন্ত্রাস আপনাদের প্রতিরোধ করতে হবে। ২০১৩-১৪ ও পরবর্তী সময়ে অগ্নিসন্ত্রাস, ভুক্তভোগীদের যন্ত্রণা ও কষ্ট আমরা দেখেছি। এই ভোগান্তি যেন মানুষের আর না হয়।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমরা যে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি তা আমাদের বাস্তবায়ন করতে হবে। সে জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা প্রয়োজন।
১১ জেলা ও ৬০ উপজেলা ভূমিহীন-গৃহহীণমুক্ত ঘোষণা
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলায় কেউ ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না’– এই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ১১টি জেলা ও ৬০টি উপজেলা সম্পূর্ণ ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত বলে ঘোষণা করেন। জেলাগুলো হচ্ছে– টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, পটুয়াখালী, সিলেট ও মৌলভীবাজার। এ নিয়ে দেশের মোট ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত জেলা ৩২টি এবং উপজেলা ৩৯৪টি।তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক এবং খাদ্যমন্ত্রী সাধান চন্দ্র মজুমদার মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।